ক্রমশই চওড়া হচ্ছে অ্যাডেনো ভাইরাসে (Adenovirus) মারণ থাবা। এবার আরও দুই শিশুর মৃত্যু হল এই ভাইরাসে। জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৯ মাসের একটি শিশুর। মৃত শিশুর পরিবার জানাচ্ছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার তাকে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর ফের জ্বরে আক্রান্ত হয় শিশু। যার জেরে ১৪ ফেব্রুয়ারি ফের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেইসময় শিশুকে ভর্তি না করে আউটডোর থেকেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। যার জেরে শিশুটিকে ফের বি সি রায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাকে ভর্তি করে নেয় কর্তৃপক্ষ। শিশুর পরিবারে অভিযোগ, অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া সত্ত্বেও বেড না থাকায় আইসিইউ-তে রাখা যায়নি তাকে। এরপর রবিবার মৃত্যু হয় তার। শিশুর পরিবারের দাবি, ডেথ সার্টিফিকেটে অ্যাডেনো ভাইরাসের কথা উল্লেখ রয়েছে। যদিও এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনওরকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, রবিবার ভোরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে ভর্তি বছর দেড়েকের একটি শিশুরও মৃত্যু হয়েছে এই একই রোগে। নদিয়ার কল্যাণীর মাঝের চরের বাসিন্দা ওই শিশুকে প্রথমে কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় দিনচারেক আগে কলকাতায় রেফার করা হয় তাকে। পরিবারের দাবি, আইসিইউ না থাকায় বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ঘুরতে হয় শিশুটিকে নিয়ে। অবশেষে ভর্তি করা হয় মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে।
এদিকে অ্যডেনো ভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকারও। এই পরিস্থিতিতে অ্যাডেনো ভাইরাস ও শিশুদের শ্বাসকষ্টজনিত অসুখ মোকাবিলায় নয়া নির্দেশিকাও জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন। তাতে বলে হয়েছে -
১. হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২. শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৩. শিশুবিভাগে রাখতে হবে পর্যাপ্ত বেড।
৪. যে সব হাসপাতালে শিশু বিভাগ নেই সেখানে তা তৈরি করে নিতে হবে।
এছাড়াও এই বিষয়ে যে গাইড লাইন (Adenovirus Guidelines) প্রকাশ করা করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্বস্তি থাকলে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ। খাওয়াদাওয়া বা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলেও যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে। পাশাপাশি জ্বর-সর্দি থাকলে, শিশুদের স্কুলে না পাঠানোরও পরামর্শ। একইসঙ্গে ৩ থেকে ৫ দিন একটানা জ্বর থাকলে বা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশের কম থাকলে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন - সকালে চা-বিস্কুট আসলে 'বিষ'? খালি পেটে যে ৫ পানীয় নিরোগ রাখে