রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে বিভিন্নমহলে সমালোচিত তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। একইসঙ্গে ক্ষোভে ফুঁসছে আদিবাসী সমাজও। অখিল গিরির মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ বাঁকুড়ার খাতরায় বিক্ষোভ দেখান আদিবাসীরা। এমনকী রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির গাড়ি আটকেও চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন।
জ্যোৎস্না মান্ডির গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ
জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে খাতরা-বাঁকুড়া রাজ্য সড়কে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন আদিবাসী সমাজের মানুষেরা। সেই সময় খাতরার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ি করে বাঁকুড়া যাচ্ছিলেন রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি। তখনই তাঁর গাড়ি আটকে দেন আদিবাসীরা। দেখান হয় বিক্ষোভও। অখিল গিরির কড়া শাস্তির দাবি জানান আদিবাসীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে উঠে যায় অবরোধ। এরপর খাতরা থানাতেও অখিল গিরির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে যান আদিবাসীরা।
এই প্রসঙ্গে জ্যোৎস্না মান্ডি সংবাদমাধ্যমকে জানান, "উনি (অখিল গিরি) যে বডি ল্যাঙ্গোয়েজে বলেছেন, আমি একজন আদিবাসী মহিলা হয়ে ব্যক্তিগতভাবে এটাকে সমর্থন করি না। উনি যেটা বলেছেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। আমি সমস্ত আদিবাসী মানুষের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং আগামিদিনেও থাকব।"
কী বলেছিলেন অখিল গিরি?
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা এলাকার বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করতে গিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর প্রসঙ্গ টেনে আনেন অখিল গিরি। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে তাঁর মন্তব্যে ছড়ায় বিতর্ক। একটি ভাইরাল ফুটেজে অখিল গিরিকে বলতে শোনা যায়, "আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?" যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি Bangla.Aajtak.In।
অখিল গিরির এই মন্তব্য ঝড়ের গতিকে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ওঠে সমালোচনার ঢেউ। কোমর বেঁধে আসরে নামে বিজেপি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অখিল গিরির বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে। দিল্লির নর্থ অ্যাভিনিউ থানায় এফআইআর দায়ের করে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, "এখনও কেন চুপ মুখ্যমন্ত্রী? এখনও কেন বরখাস্ত করা হল না অখিল গিরিকে?"
ওড়িশার রায়রাংপুরেও দায়ের হয়েছে অভিযোগ। এই অঞ্চলেই রাষ্ট্রপতির আদি বাড়ি। এখানকার বিধায়কও ছিলেন তিনি। বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য অখিল গিরির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন রায়রাংপুরের বর্তমান বিধায়ক। অবিলম্বে তাঁর গ্রেফতারির দাবিও জানানো হয়েছে। যদিও অখিল গিরির এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছে তৃণমূলও।