কাঁটা সেই লাইভ স্ট্রিম, ভিডিও রেকর্ডিং। টানা ৩ ঘণ্টা টানাপোড়েনের পরও হল না মুখ্যমন্ত্রী-জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক। 'দেরি হয়ে গেছে' দাবি করে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান চন্দ্রিমা স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এক এক করে মুখ্যসচিব মনোজ পন্ত ও স্বরাষ্ট্র সচিব কালীঘাট থেকে বেরিয়ে যান। ১০ মিনিট দেরি হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের, নাহলে তাঁদের বের করে দেওয়া হবে বলে বলা হয়। এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন আন্দোলনকারীরে।
এদিন জুনিয়র চিকিৎসকেরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি এলে শুরু থেকে স্বচ্ছতা বজায় রেখে বৈঠকের দাবি করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী এদিনও লাইভ স্ট্রিমের বিরোধিতা করেন। শেষে চিকিৎসকেরা মেনেও নেন, লাইভ স্ট্রিম নয়, তবে ভিডিও রেকর্ড হোক। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে তা করা যাবে না কারম দর্শিয়ে রাজি হননি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "তোমাদের কাছ থেকে অনুরোধ এসেছিল, সেখানে লাইভ স্ট্রিমের কথা লেখা ছিল না। লক্ষ্মী ভাই বোনেরা, তোমরা এসো, এক কাপ চা খেয়ে যাও। যেহেতু ব্যাপারটি কোর্টে কেস চলছে, তাই লাইভ স্ট্রিম করা যাবে না। আপনারা যদি নাই আসেন, তাহলে আমাকে চিঠি দিলেন কেন, অসম্মান কেন করছেন? আরও তিন দিন অপেক্ষা করেছি। তোমরা ছোট, আমি বড়, তাই তোমরা আসার আগে আমি ছুটে গেছিলাম। তোমাদের কাউকে কাউকে বলব, ফরগেট পলিটিক্স। তোমরা মানুষের স্বার্থে কথা বলো। মিনিটস করে দেব। আমাদের পক্ষ থেকে আমাদের লোক সই করবে, তোমাদের পক্ষ থেকে একজন সই করবে। আমি তোমাদের সব ডিমান্ড তো মানতে পারছি না। আমি সুপ্রিম কোর্ট থেকে অনুমতি নেব, তারপর তোমাদের ভিডিও দেব। আমরাও ভিডিও কোথাও ব্যবহার করব না। তোমাদের বসতে জায়গা দেওয়া হচ্ছে। তোমাদের হাত জোড় করে বলছি, তোমরা বসো, ভিজো না। কেন ভিজছ? আমরা টোটালটা রেকর্ড করে রাখছি। কোর্টের কেস শেষ হয়ে গেলে তোমাদের ভিডিও দেব। তোমাদের মিস লিড করব না। আমার চিফ সেক্রেটারি, ডিজি পুলিশ সবাই অপেক্ষা করছে।"
এও দাবি করেন তারপর সাংবাদিক বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি বলেন, "আমাদের বলা হল, হয় বেরিয়ে যান, নাহলে আপনাদের বাস ডেকে বের করে দেওয়া হবে। আমরা ৩৫ দিন অপেক্ষা করছি। আমরা সব শর্ত ছেড়ে দিলাম, তারপর যখন বলতে গেলাম। আমরা শেষে শুধু মিনিটসের শর্তেও রাজি হলাম। তারপর তাঁরা বললেন, এখন দেরি হয়ে গেছে। তারপর আমাদের সামনে থেকে কাঁচের গাড়ি করে তাঁরা বেরিয়ে গেলেন।"
চিকিৎসকেরা আরও বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের প্রতি সম্মান রেখে ভিডিওগ্রাফি ছাড়াই আমরা বৈঠক করব। আমাদের ভিডিওর দরকার নেই। আমরা তাঁর উপরে বিশ্বাস রাখলাম। উনি নিজে এসে অনুরোধ করলেন, তাই ভাবলাম ভিডিওর দরকার নেই। তখন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এসে বলেন,অনেক সময় হয়ে গিয়েছে, আমরা আলোচনা সম্ভব নয়। হয় বেরিয়ে যান, নইলে বাস বের করে দেওয়া হবে। আমরা আড়াই ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভিজছি। আমরা ৩৫ দিন ধরে অপেক্ষা করছি। আমাদের ঘাড়ধাক্কা দেওয়া হল। আলোচনা সম্ভব নয়। আমরা তো আলোচনা করতে এসেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে বললেন, আমরা আস্থা রাখতে চাইলাম। আমরা হতাশ। আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।"
ফলে এদিনও আলোচনা না হওয়ায় স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধর্নাস্থলে ফিরে গেলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।