Advertisement

Glenary's: দার্জিলিঙে গ্লেনারিজ-এর ভবিষ্যত্‍ কী? bangla.aajtak.in-কে বিস্তারিত জানালেন কর্ণধার

সেলফি জোনে হিসেবে বিখ্যাত 'HOPE' রেলিংয়ের সামনে দাঁড়িয়েই হয়তো রেস্তোরাঁ বাঁচানোর আশা করছেন গ্লেনারিজের মালিক অজয় এডওয়ার্ডস। কারণ, পানশালার লাইসেন্স সাসপেন্ড হতেই জনপ্রিয় এই বেকারি এবং রেস্তোরাঁর ব্যবসা অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। ব্যবসা না চললে ঝাঁপ বন্ধ হতে পারে সম্পূর্ণ। তবে আইনি পথে হাঁটছেন তিনি।

গ্লেনারিজ কি সম্পূর্ণ বন্ধ হচ্ছে? গ্লেনারিজ কি সম্পূর্ণ বন্ধ হচ্ছে?
রূপসা ঘোষাল
  • দার্জিলিং,
  • 10 Dec 2025,
  • अपडेटेड 1:20 PM IST
  • তেমন হলে গ্লেনারিজ পুরোপুরি বন্ধ করে দেব!
  • বলছেন গ্লেনারিজের মালিক অজয় এডওয়ার্ডস
  • কী পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর? জানালেন bangla.aajtak.in-কে

'HOPE'। ঐতিহ্যবাহী গ্লেনারিজ বাঁচাতে এই শব্দটিই এখন সম্বল মালিক অজয় এডওয়ার্ডসের কাছে। কারণ, শুধু পানশালা নয়, পুরোপুরি ঝাঁপ বন্ধ হতে পারে দার্জিলিঙের এই বিখ্যাত রেস্তোরাঁর। কেবলমাত্র বেকারি দিয়ে ব্যবসা চালাতে না পারলে বাধ্য হয়েই সম্পূর্ণ শাটডাউনের পথে হাঁটতে হবে। তবে পানশালা পুনরায় চালু করতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন। bangla.aajtak.in-কে exclusive সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্টের (IGJF) আহ্বায়ক অজয় এডওয়ার্ডস।

প্রশ্ন: কেন আচমকা সাসপেন্ড করা হল গ্লেনারিজ পানশালা?

অজয় এডওয়ার্ডস: গ্লেনারিজের সঙ্গে ১৫০ বছরের ইতিহাস জড়িত। কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের ট্রিঙ্কাসের থেকেও পুরনো গ্লেনারিজের লাইভ মিউজিকের ইতিহাস। রাজ্য সরকারের আবগারি দফতরের নিয়ম বলছে, প্রতি বছর পানশালার লাইসেন্স রিনিউ করতে হবে এবং নির্দিষ্ট টাকা জমা করতে হবে। এছাড়াও লাইভ মিউজিকের জন্য পুলিশের তরফ থেকে অনুমতি নিতে হয়। গত বছর আমরা আবেদন করেছিলাম এবং দার্জিলিঙের SP প্রবীণ প্রকাশ স্বাক্ষর করেছিলেন অনুমতি পত্রে। তবে সেই অনুমতি পত্রে আবগারি দফতরের কাছে পৌঁছয়নি। কপি আমার কাছে রয়েছে। কোনও কারণ ছাড়াই আচমকা আমার পানশালার অনুমোদন খারিজ করে দেওয়া হয়। এখন বলছে আমরা নাকি আবেদনই করিনি। কিন্তু তা সত্য নয়।

প্রশ্ন: 'গোর্খাল্যান্ড' নামে ব্রিজ তৈরির জন্যই গ্লেনারিজে কোপ পড়ল?

অজয় এডওয়ার্ডস: ৩২টি সমাজের জনগণ এই ব্রিজ তৈরি করেছে। আমি সরাসরি বলছি না এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। গোর্খাল্যান্ড সেতু তৈরি করে আমি এখানকার মানুষের আবেগকে সম্মান জানিয়েছি। গোর্খাল্যান্ড ব্রিজ শুধু বালি, পাথর ও সিমেন্টের তৈরি নয়। এতে পাহাড়ের মানুষের আবেগ রয়েছে। ব্রিজের নাম 'গোর্খাল্যান্ড' মানে তো কাল থেকে আমরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেব, তেমনটা নয়। তাহলে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আমার পানশালায় কেন রেড হল? ফলে এটা কাকতালীয় নয়।

প্রশ্ন: বড়দিন, বর্ষবরণের সময়ে পানশালায় তালা, কতটা ক্ষতি?

Advertisement

অজয় এডওয়ার্ডস: প্রতি বছরই আমরা ক্রিসমাসের সময়ে গ্লেনারিজে বিশেষ সেলিব্রেশন করি। যেহেতু পর্যটকদের ভিড় বাড়ে এই সময়ে, এবারও পরিকল্পনা ছিল। সাসপেনশনের আগে গ্লেনারিজে ১২-১৩ লক্ষ টাকার ব্যবসা হচ্ছিল। এক ধাক্কায় তা ৫০% কমে গতকাল সাড়ে ৬ লক্ষে নেমে গিয়েছে। এই গ্লেনারিজের রোজগার থেকেই আমরা সেতু নির্মাণ করেছি। রাস্তা নির্মাণ করেছি। গরিব মানুষদের চিকিৎসার খরচ দিই। ২৫০ কর্মী কাজ করেন গ্লেনারিজে। অশীতিপর হয়ে গেলেও তাঁরা অবসর নেন না। তাঁদের পরিবারের দায়িত্ব আমাদের কাঁধে।

প্রশ্ন: পরবর্তী পরিকল্পনা কী?

অজয় এডওয়ার্ডস: আইনি পথেই এই সমস্যার মোকাবিলা করব। কলকাতা হাইকোর্টে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য মামলা লড়বেন।

প্রশ্ন: গ্লেনারিজের ভবিষ্যৎ কী?

অজয় এডওয়ার্ডস: কলকাতা হাইকোর্ট থেকে রিলিফ পেলে নিশ্চয়ই পানশালা আবার চালু হবে। তা না হলে যদি ১৫০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী গ্লেনারিজ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয়, তা-ই করব। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করব। বেকারি এখন চালু রয়েছে তবে ব্যবসার ক্ষতি হলে হয়তো পুরো ঝাঁপ বন্ধ করার সিদ্ধান্তই নিতে বাধ্য হব। কারণ স্টাফেদের স্যালারি, বিদ্যুতের খরচ, শীতকালে চিমনির অতিরিক্ত খরচ সব সামলে পানশালা ছাড়া শুধুমাত্র বেকারি কিংবা ক্যাফেটেরিয়া চালানো যাবে কি না আদৌ, তা হিসেব করে দেখতে হবে। ন্যায়বিচার না পেলে গ্লেনারিজ শাটডাউন করে দেব।

প্রশ্ন: মুখ্যমন্ত্রীর থেকে সাহায্য চাইবেন?

অজয় এডওয়ার্ডস: রাজ্য, কেন্দ্র, সাংসদ-বিধায়ক সকলকেই বলেছিলাম এই সেতু তৈরি করুন। সাধারণ মানুষের সমস্যা গত ৫০ বছর ধরে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। মিথ্যে মামলায় আমাদের লোকেদের ফাঁসানো হয়েছে, জেল খাটানো হয়েছে। ব্রিটিশ চলে গিয়েছে কিন্তু সরকার তাদের জায়গাটা নিয়ে নিয়েছে। চিরকাল দার্জিলিংকে অবহেলা করা হয়েছে। বাংলায় সৎ পথে থেকে ব্যবসা করার কোনও পরিবেশই নেই। রাজ্য কিংবা কেন্দ্র, কারও থেকেই সাহায্য নেব না। যদি মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন এটা অন্যায় হচ্ছে তাহলে উনি যা করার করবেন।

ভিড়ে ঠাসা ম্যাল রোডের মাঝেই উজ্জ্বল লাল রঙের হরফে লেখা 'HOPE'-এর সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা কিংবা পানীয়ে চুমুক দিয়ে চিকেন স্টেক খাওয়ার হিড়িক। তবে কি শৈল শহরে চিরাচরিত এই দৃশ্য আর চোখে পড়বে না? মনখারাপ দার্জিলিংপ্রেমীদের।

Read more!
Advertisement
Advertisement