Heartwarming Story: কন্যাসন্তান জন্মালে আজও অনেক পরিবারে হতাশার ছায়া নামে। কিন্তু মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর থানার অন্তর্গত এক গ্রামে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ছবি। সদ্যোজাত কন্যার জন্মের আনন্দে ঢাক-ঢোল, ফুলে সাজানো গাড়ি আর খুশির উল্লাস। মেয়েকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে এলেন এক গর্বিত বাবা— মইনুল শেখ। সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন(Murshidabad baby girl welcome)।
মাইনুলের এই উদ্যোগে আনন্দের হাওয়া গোটা গ্রামে। পথের ধারে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখলেন সেই দৃশ্য। কেউ কেউ ক্যামেরা বন্দি করলেন ভিডিওতে, কেউ বাহবা দিলেন গলা ছেড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, 'এমন আনন্দ করতে করতে কন্যাসন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফেরানো সত্যিই বিরল। মইনুল দেখিয়ে দিলেন— মেয়ে সন্তানও গর্ব, সম্মান ও ভালোবাসার যোগ্য।'
সমাজে এখনও লিঙ্গ বৈষম্যের ছায়া
বাস্তবিক অর্থেই এখন ছেলে-মেয়ে সমান। বাস্তবে মেয়েরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমস্ত ক্ষেত্রেই এগিয়ে চলেছে— ঘরের কাজ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত। কিন্তু সমাজের চোখ কি সেই অর্থে বদলেছে?
আজও দেখা যায়, অনেক পরিবারে মেয়ের পড়াশোনা মাঝপথে থেমে যায়। বাল্যবিবাহ হয়ে যায় গোপনে। কন্যা ভ্রূণ হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটে। এমনকী সদ্যোজাত কন্যাকে ফেলে যাওয়া হয় ডাস্টবিনের পাশে।
এই প্রেক্ষিতেই মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরের মইনুল শেখ যেন এক নতুন আশার আলো দেখালেন। তাঁর এই পদক্ষেপ লিঙ্গ বৈষম্য ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিবাদ বলা যেতে পারে।
‘মেয়ে মানেই গর্ব’
ফুলে মোড়া গাড়ি, ঢাক-ঢোলের আওয়াজ, সব মিলিয়ে যেন এক সামাজিক বার্তা দিয়ে গেল এই দৃশ্য। কেউ বলছেন, “এটা শুধু মেয়ের জন্ম নয়, সমাজের চোখ খুলে দেওয়ার এক প্রয়াস।'
মইনুল শেখের এই মানবিক ও সাহসী উদ্যোগ কেবল তাঁর পরিবারের জন্য নয়, গোটা সমাজের জন্য এক শিক্ষা। যে সমাজ এখনও ‘ছেলে মানেই উত্তরাধিকারি, মেয়ে মানেই বোঝা’ মনে করে, সেই সমাজের বুকেই যেন লেখা হল নতুন বার্তা ‘মেয়ে মানেই গর্ব।’
সংবাদদাতা: সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়