সন্দেশখালিকাণ্ডে অধরা তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে শাহজাহান প্রসঙ্গ ওঠে। প্রশ্ন শুনে মমতার সংক্ষিপ্ত জবাব, 'তদন্ত চলছে। কোনও মন্তব্য করব না।'
সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। ঘটনার প্রায় ১ সপ্তাহ পরও শাহজাহানের নাগাল পায়নি পুলিশ। এই নিয়ে শাসক বনাম বিরোধী বাগযুদ্ধ চলছে। সন্দেশখালির ঘটনার জন্য মমতাকেই 'দায়ী' করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।' বেলডাঙার সভায় শুভেন্দু আরও বলেছিলেন, 'শেখ শাহজাহানের বাড়িতে দুষ্কৃতি তাণ্ডব হয়েছে। চোর মমতার প্রিয় পাত্র শেখ শাহজাহান। মমতার পুলিশ হয়তো জানতে পেরেছিল যে, তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি যাচ্ছে। তাই বাঁচাতে এ সব করেছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, পশ্চিমবঙ্গে কেউ সুরক্ষিত নেই।'
অন্য দিকে, এই ঘটনায় থানায় ইডির আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছিল শাহজাহানের পরিবার। দায়ের করা হয়েছ এফআইআর। ওই এফআইআর খারিজের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দিয়েছেন, এখনই ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। বৃহস্পতিবার ন্যাজাট থানায় ঘেরাও কর্মসূচি করে বিজেপি। নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সন্দেশখালির ঘটনার পর কলকাতায় এসেছিলেন ইডির ডিরেক্টর রাহুল নবীন। সন্দেশখালির ঘটনায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
কী ঘটেছে সন্দেশখালিতে?
গত ৫ জানুয়ারি সকালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডির একটি দল। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে এই অভিযান বলে খবর। সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির দিকে ইডির আধিকারিকরা যাওয়ার চেষ্টা করলেই রুখে দাঁড়ান বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা শাহাজাহানের অনুগামী বলে দাবি। শাহাজাহানের বাড়িতে ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডির আধিকারিকরা। অভিযোগ, সেই সময়ই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর করা হয়। ধাক্কা মেরে সরানো হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। ইডির আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়া করা হয়। তাঁদের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই সময় তিন আধিকারিক জখম হন। আক্রান্ত হয় সংবাদমাধ্যমও।