তৃণমূলের অনেক বিধায়কই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে অতীতে দাবি করতে শোনা গিয়েছে বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে। সেক্ষেত্রে রীতিমতে সংখ্যাও উল্লেখ করে দেন মিঠুন। আবার গত ডিসেম্বরের ৩টি নির্দিষ্ট তারিখের কথা উল্লেখ করে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাস্তবের মাটিতে চিত্রটা কিন্তু একটু অন্যরকমই দেখা যাচ্ছে। আর তার সাম্প্রতিকতম প্রমাণ হল আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের (Suman Kanjilal) তৃণমূলে যোগদান। রবিবারই ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক। আর বিজেপি বিধায়কের এহেন পদক্ষেপের পরেই কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, তবে কি মিঠুনের দাবি বা শুভেন্দুর ডেডলাইন সবটাই 'ফাঁকা আওয়াজ'?
একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি 'দরজা খোলা'র প্রক্রিয়া শুরু করে দিল তৃণমূল? কারণ কিছুদিন আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেছিলেন,"দরজা খুললে বিজেপি দলটাই আর থাকবে না"। পরে এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "আপনারা কি অপেক্ষা করে আছেন দরজা কবে ফাঁক হবে? ঠিক সময়ে হবে। রাজনীতিতে টাইমিং গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক সময়ে দরজা ফাঁক কেন, একটু খোলাই হবে"। আর দেখা গেল সেই মন্তব্যের কিছুদিন পরেই তৃণমূলে যোগ দিলেন সুমন কাঞ্জিলাল।
যদিও সুমন কাঞ্জিলালের এই যোগদানকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharyya) বলেন, "এতে বিজেপির বহমানতায় কিছু এসে যাবে না। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির প্রাপ্ত আসন সংখ্যা ২৪-এর পর থেকে গোনা শুরু হবে"। অর্থাৎ গত লোকসভা নির্বাচনের থেকেও আগামীবারে রাজ্যে তাঁদের আসন সংখ্য আরও বাড়বে বলেই দাবি করেন শমীকবাবু। একইসঙ্গে সুমন কাঞ্জিলালের তৃণমূলে যোগদানের ঘটনায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করেন এই বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি সারা দেশেই মতাদর্শ নির্ভর রাজনৈতিক দল। কারও দল না ভেঙে, কোনও দলের গর্ভ থেকে জন্ম না নিয়ে, সে ভারতবর্ষের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে, এই মাটির কথা বলে, আজকে এই জায়গায় পৌঁছেছে, এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা আমাদের মতাদর্শ, রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে তৈরি আছি, যদি কেউ যেতে চায় যেতে পারে, আমাদের কোনও বক্তব্য নেই"।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বিধায়ক বিজেপি (BJP) ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে (TMC)। সেক্ষেত্রে গেরুয়া শিবির যতই বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিক, বাস্তবে এর কোনও প্রভাব আগামী নির্বাচনগুলিতে পড়ে কিনা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিকমহল।
আরও পড়ুন - বাংলা থেকে উত্তরাখণ্ডে জালনোট পাচারের চেষ্টা, ধৃত ৪