রথযাত্রা মানেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পুরীর ছবি। বাঙালির অন্যতম প্রিয় গন্তব্যস্থল পুরী। বঙ্গোপসাগরের কিনারে পুরীতে ধুমধাম করে প্রতি বছর রথযাত্রা উৎসব পালন করা হয়। যা দেখতে ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ মানুষ। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে বাংলার সৈকত শহরের বুকেও বড়সড় করে রথযাত্রা পালন হতে চলেছে। পুরীর ধাঁচে দিঘায় তৈরি হচ্ছে জগন্নাথ দেবের মন্দির। সেই মন্দিরের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। সেই কাজ সম্পূর্ণ হলেই পরের বছর থেকে দিঘায় রথযাত্রা পালন করা হবে। শুক্রবার এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, পুরীর ঐতিহ্যশালী জগন্নাথ মন্দিরের অনুরূপে পশ্চিমবঙ্গে দীঘায় আমরা জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার একটি গর্ব-উদ্দীপক মন্দির তৈরি করছি যেখানে প্রতিবছর রথযাত্রাও পালিত হবে। আগামী বছর থেকেই এই মন্দিরে রথের রশিতে টান পড়বে।
কিছু অন্যরকম কথা শোনা গেলেও প্রকৃত বাস্তব হল, কিছু কারিগরি কাজ ও পদ্ধতি এখনো অসম্পূর্ণ থাকায় আমরা আগামী বছর থেকেই দীঘায় রথযাত্রা পালন করব। পুরীর মন্দিরের রথযাত্রা যেভাবে পালিত হয় সেভাবেই ভক্তি ও শ্রদ্ধায় পালিত হবে দীঘার রথযাত্রা। সবাই সেখানে আমন্ত্রিত। এই নূতন মন্দির ও উৎসব হবে সারা ভারতের নতুন সম্প্রীতি-সাধনের প্রকল্প। জয় জগন্নাথ!' *( বানান অপরিবর্তিত)।
প্রথমে জানা গিয়েছিল, এ বছর থেকেই দিঘায় রথযাত্রা পালন করা হবে। তবে শুক্রবার মমতা জানিয়ে দিলেন যে, আগামী বছর থেকেই দিঘায় রথযাত্রার আয়োজন করা হবে।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মতো দিঘায় তৈরি হচ্ছে জগন্নাথ ধাম। মন্দির নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। মন্দির নির্মাণ কাজ চলার পাশাপাশি দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে শুরু হয়েছে রথ নির্মাণের কাজ। পুরীর আদলে দিঘায় একটি জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের কাজ শুরু হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। তবে কবে মন্দিরের উদ্বোধন করা হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এখনই জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন হচ্ছে না। কারণ জগন্নাথ মন্দিরের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
দিঘা রেল স্টেশনের পাশেই ভগিব্রহ্মপুর মৌজায় ২৫ একর জমির উপর চলছে জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের কাজ। ২০১৮ সালে ২০০ কোটির এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজের সূচনা হয়েছিল ২০২২ সালের অক্ষয়তৃতীয়ার দিন থেকে।
সম্প্রতি মন্দির নির্মাণ- সহ পরিকাঠামোগত উন্নয়ের যাবতীয় কাজ পরিদর্শন করেন নির্মাণকারী সংস্থা হিডকো’র ভাইস চেয়ারম্যান হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক তথা কাঁথির মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্য।