আরজি করকাণ্ডের আবহে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক-নার্সদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠল। রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিলেন হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। শুক্রবার রাতে হাসপাতালে যান আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা।
ঠিক কী ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, সাগর দত্ত হাসপাতালে এক মহিলার চিকিৎসা চলছিল। তিনি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। অভিযোগ করা হয়েছে যে, হাসপাতালে আনার পরও রোগীর চিকিৎসা করা হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁকে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। পরে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এরপরেই উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। চিকিৎসকদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান রোগীর পরিজনরা। অভিযোগ, চিকিৎসকদের ধাক্কাধাক্কি দেওয়া হয়। চিকিৎসকদের বাঁচাতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেও সাগর দত্তে রোগী মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের একই ঘটনা ঘটল।
অন্য দিকে, আরজি করের ঘটনায় আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়াচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মহালয়ার দিন, ২ অক্টোবর ধর্মতলায় মহামিছিল ও মহাসমাবেশের ডাক দিলেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন 'ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট' এসএসকেএমের অডিটোরিয়ামে সমাবেশ করেন। 'আগুন এখনও নেভেনি'— বার্তা দিলেন তাঁরা। জুনিয়র ডাক্তাররা এদিন জানান, নিজেদের দাবিতে তাঁরা অনড় থাকছেন। তাঁরা জানালেন, পাঁচ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই জারি থাকবে। এসএসকেএম-এর মঞ্চ থেকে তাঁরা বলেন, 'আন্দোলন নিয়ে নানা অপপ্রচার চলছে। অনেকে বলছেন নতুন-নতুন দাবি তোলা হচ্ছে। কিন্তু সেটা সঠিক নয়।' এর পাশাপাশি এদিন 'থ্রেট কালচার' নিয়েও সুর চড়ান তাঁরা। চিকিৎসক তীর্থঙ্কর গুহঠাকুরতা বলেন, 'হাসপাতালগুলিতে হুমকি সংস্কৃতি একটি খুবই গুরুতর বিষয়।'
নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। চিকিৎসক দেবাশিস হালদার জানান, আগামী ২ অক্টোবর মহালয়া পড়েছে। আর সেই দিনই মহামিছিলের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। মিছিলের শেষে ধর্মতলায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মহালয়ার দিন দুপুর ১টা থেকে মিছিল শুরু হবে। মহালয়া থেকেই সাধারণত কলকাতায় দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যায়। তবে এবারের পুজোয় 'উৎসবে'র মানসিকতা নেই বলে জানান জুনিয়র ডাক্তাররা। দেবাশিস বলেন, 'সামনে পুজো আসছে। আমরা কাউকে উৎসবে বিরত থাকতে বলতে পারি না। কিন্তু আমরা উৎসবের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত নই।'