
হাবড়া ২ নম্বর ব্লকের ১৫৯ নম্বর বুথ। ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে এই গোটা বুথটাই 'লাপতা' নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে। অর্থাৎ, গোটা একটা বুথের কোনও ভোটারের তালিকাই নেই! তবে ২০০৩ সালের তালিকায় অনেকের নাম রয়েছে। কিন্তু পুরনো তালিকা অনলাইনে না পাওয়ায় আতঙ্কে এলাকার মানুষ।
স্থানীয়দের দাবি, যদি ২০০২ সালের তালিকায় নাম না থাকে, তাহলে ভোটার তালিকা থেকেও নাম বাদ যেতে পারে। এমন হলে নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কা তাঁদের।
এক বাসিন্দা বললেন, 'আমাদের নাম ২০০৩ সালে আছে, কিন্তু ২০০২ সালের তালিকা নেই। এখন যদি নাম বাদ যায়, তাহলে কী হবে?'
গুমাতেও একই অভিযোগ
গুমা ১ নম্বর পঞ্চায়েতের ৬১১ নম্বর বুথেও একই ঘটনা। অভিযোগ, ২০০২ সালের তালিকা ওয়েবসাইটে থাকলেও ৩৪৩ থেকে ৪১৪ নম্বর পর্যন্ত ভোটারদের নাম অনলাইনে মিসিং।
গুমা ১ নম্বর অঞ্চলের যুব তৃণমূল সভাপতি সাদিক সাহাজি বলেন, “এটা একেবারে পরিকল্পিত চক্রান্ত। মুসলিমদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশেই এমন হচ্ছে।'
তিনি জানান, অন্তত ৭১ জনের নাম অনুপস্থিত। বিষয়টি ইতিমধ্যেই স্থানীয় বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী এবং নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া
অশোকনগরের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি বাপি মিস্ত্রি অবশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোনও মুসলিমের নাম বাদ যাবে না। বাদ যাবে যারা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী। তৃণমূল মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।'
বিএলও-র বক্তব্য
এলাকার এক বিএলও জানিয়েছেন, “আমি ইতিমধ্যেই বিষয়টি বিডিও অফিসে জানিয়েছি। শনিবারের ট্রেনিং মিটিংয়েও তুলব।' তিনি আরও বলেন, “এখন যেসব ডকুমেন্টস পাচ্ছি, সেগুলো নিয়েই কাজ করছি। কিন্তু মানুষ সত্যিই আতঙ্কে আছেন।'
আতঙ্কে এলাকাবাসী
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাবড়া ও গুমা এলাকায় চাঞ্চল্য। অনেকে দিনরাত নিজের নাম খুঁজছেন ওয়েবসাইটে। তাতেই আরও ভয় বাড়ছে।
এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “আমরা স্বাধীনতার পর থেকে ভোট দিচ্ছি। এখন হঠাৎ যদি নাম বাদ যায়, তবে কোথায় যাব?' নির্বাচন কমিশনের তরফে এই বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা মেলেনি। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংবাদদাতা: দীপক দেবনাথ