Maamta Banerjee at WB Assembly: 'যারা বিধানসভার কর্মীদের মারল, তারা FIR করল।' মঙ্গলবার বিধানসভায় BJP বিধায়কদের উদ্দেশে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার অধিবেশন শেষ দিনে বিরোধীদের পাল্টা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী(CM Mamata)।
সোমবার চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়। তাঁদের মার্শাল দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। সেই সময় ধাক্কাধাক্কিতে চশমা ও ঘড়ি ভাঙার অভিযোগ ওঠে। তার কয়েক ঘণ্টা বাদেই পার্ক স্ট্রিট থানায় FIR দায়ের করেন বিজেপি বিধায়করা। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, 'যারা মারল, তারাই গিয়ে FIR করল। তাঁদের হাতেই বিধানসভার কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। অধ্যক্ষ আইনজীবী, তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।'
একই সঙ্গে বিধানসভায় বিরোধীদের ভূমিকা নিয়েও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। বলেন, 'বিরোধী বিধায়ক বক্তৃতা করবেন, কিন্তু জবাবি ভাষণ না শুনে বেরিয়ে যাবেন— এটা চলতে পারে না। বিধানসভার রীতি অনুযায়ী, বক্তৃতা হলে জবাবি ভাষণও শুনতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার থেকেই উত্তেজনার সূত্রপাত। বিরোধী বিধায়করা বিল পেশের সময় কিংবা জবাবি বক্তব্যের সময় লাগাতার স্লোগান দিতে থাকেন। তার জেরেই অধিবেশনে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
সোমবার সেই স্লোগানই পরিণত হয় আরও বড় বিক্ষোভে। এক বিল পেশের সময় বিজেপি বিধায়কেরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান। এরপর অধ্যক্ষ চার বিজেপি বিধায়ক— শংকর ঘোষ, মনোজ ওঁরাও, দীপক বর্মন ও অগ্নিমিত্রা পলকে সাসপেন্ড করেন। কিন্তু তাঁরা বের হতে অস্বীকার করেন। শেষ পর্যন্ত মার্শাল ডেকে তাঁদের বার করে দিতে বাধ্য হন স্পিকার।
শঙ্কর ঘোষ অভিযোগ করেন, তাঁকে বলপ্রয়োগ করে বের করা হয়। ধস্তাধস্তিতে বিজেপি বিধায়কের চশমা এবং ঘড়ি ভেঙে গিয়েছে বলেও দাবি করা হয়। এরপর বিধানসভার বাইরে সিঁড়িতে বসে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের হাতে ছিল ‘চুপ’ লেখা প্ল্যাকার্ড।
মঙ্গলবারও সেই প্ল্যাকার্ড হাতে বিধানসভার সিঁড়িতে বসে পড়েন বিজেপি বিধায়করা। ঠোঁটে আঙুল ঠেকিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান। তাঁদের দাবি, বিধানসভায় কিছু বলতে উঠলেই বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করে বের করে দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই 'চুপ' লেখা প্ল্যাকার্ড।
এদিনের অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী আরও একবার ডিভিসি-র ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, 'ওরা জল ছেড়ে দেয়, কিছু না বলেই। কোনও কথা শুনতে চায় না।' রাজ্যের সঙ্গে ডিভিসি-র কোঅর্ডিনেশনের অভাবেই বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সব মিলিয়ে, চলতি অধিবেশনের শেষদিনও বিধানসভায় উত্তেজনার আবহ অব্যাহত রইল। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা ও বিরোধীদের বিক্ষোভ-স্লোগানে তপ্ত রাজ্যের আইনসভা।