তুরস্কে অবাক করা প্রাচীন নিদর্শন পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ববিদেরা প্রায় ১১ হাজার বছরের পুরনো একটি স্থানের সন্ধান পেয়েছেন। সেখানে মানুষের মুখের আদলের মূর্তি এবং পুরুষদের যৌনাঙ্গের মতো দেখতে স্থম্ভের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তবে সেগুলি ওই সময় কেন তৈরি করা হয়েছিল তা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি গবেষকরা। এই বিষয়ে গবেষণা জারি রয়েছে। (সমস্ত ছবি সূত্র-গেটি)
মনে করা হচ্ছে এই জায়গায় হয়ত কোনও সাংস্কৃতিক বা পারম্পরিক প্যারেড হত। তবে সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানটির নাম কারাহেনটেপে। জায়গাটি দক্ষিণ তুরস্কের সানলিউরফার পূর্বে অবস্থিত।
ইস্তানবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ববিদ নেকমি কারুল বলেন, এই মূর্তি ও স্থম্ভ সেই সময়কার, যখন মানুষ লিখতে শেখেনি। তাঁর এই গবেষণা সম্প্রতি Türk Arkeoloji ve Etnografya Dergisi জার্নালে প্রকাশিত হয়।
তবে এই ধরণের মূর্তি ও স্থম্ভ কেন তৈরি করা হয়েছিল তা ওই রিপোর্টে লেখা হয়নি। এই মূর্তি ও স্থম্ভগুলি যেখানে পাওয়া গিয়েছে, অনুমান করা হচ্ছে সেখানে একটি ইমারত ছিল এবং সেগুলি পৃথক পৃথক ৩টি ইমারতের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল। অর্থাৎ জায়গাটি একটি কমপ্লেক্সের মতো ছিল।
নেকমি কারুলের মতে, মানুষের মুখের আদালের মূর্তির চারদিকে পুরুষদের গোপনাঙ্গের মতো যে স্তম্ভগুলি রয়েছে সেগুলিকে প্রদক্ষিণ করে কিছু একটা কাজকর্ম হত। তবে সেটি কী ধরণের কাজ, তা এখনও জানা যায়নি।
নেকমি কারুল জানাচ্ছেন, এই বিষয়ে আরও গবেষণার ও খননের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ তিনি জানাচ্ছেন, কোনও ধরণের কার্যক্রমে বাসনপত্র, যন্ত্র, আসবাবপত্র ও গয়নার ব্যবহার হয়। সেক্ষেত্রে যদি সেগুলি পাওয়া যায় তবে এই বিষয়ে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে।
কার্যক্রমের পর সেই স্থানটিকে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এর কারণ হিসেবে নেকমি কারুলের অনুমান, মাটি দিয়ে ঢেকে দিলে একদিকে যেমন জিনিসটি নষ্ট হয় না, অন্যদিকে কেউ সেই বিষয়ে জানতেও পারে না। ফলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
প্রত্নতত্ত্ববিদেরা মনে করছেন, কারাহেনটেপে ও গোবেক্লিটেপে প্রায় একই সময়ের নিদর্শন। তাই গোবেক্লিটেপেতে যে ধরণের মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল এখানেও সেই ধরণেরই মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। আর গোবেক্লিটেপেও সানলিউরফাতেই ছিল। তাই গবেষকরা এখন এই উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা করছেন।
১৯৯৭ সালে প্রথম কারাহেনটেপের খোঁজ পাওয়া যায়। তবে তারপর থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আর সেখানে খনন কার্য চালান হয়নি। কারণ এরমাঝে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা অন্য জায়গায় গবেষণা চালাচ্ছিলেন। প্রসঙ্গত, তুরস্কে লাগাতার প্রাচীন স্থানের খোঁজ চালানো হচ্ছে এবং সেগুলি ইতিহাসের বহু তথ্য তুলে ধরছে।