প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বর্তমানে ফ্রান্স সফরে রয়েছেন। দুদিনের সফরে প্যারিসে মোদীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্যারিসে AI Action Summit-এ অংশ নেবেন মোদী।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বে আজ AI Action Summit-এর আয়োজন করা হয়েছে প্যারিসে। সেখানেই সহ অধ্যক্ষ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে।
এখন প্রশ্ন হল, কেন নরেন্দ্র মোদীকেই সহ অধ্যক্ষের জন্য ডাকা হল? অন্য কোনও দেশের রাষ্ট্রপ্রধান কেন নয়?
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বললেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভারত ও ফ্রান্স দুটি শক্তিশালী দেশ এবং আমাদের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। আমরা আমেরিকা এবং চিনের সঙ্গে কাজ করতে চাই কিন্তু কারও উপর নির্ভরশীল হতে চাই না। ভারত একটি উদীয়মান শক্তি এবং প্রতি বছর দশ লক্ষ প্রযুক্তিবিদ তৈরি করে যা ইউরোপ এবং আমেরিকার মিলিত প্রযুক্তিবিদের চেয়েও বেশি।
তিনি বলেন, আমরা সম্পূর্ণ স্বনির্ভরতা চাই কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে আমরা বিচ্ছিন্নভাবে বাস করতে চাই। আমাদের এমন অংশীদারদের প্রয়োজন যাদের উপর আমরা নির্ভরশীলতা ছাড়াই বিশ্বাস করতে পারি।
ম্যাক্রোঁ বলেন, ভারত এবং ফ্রান্স দুটি শীর্ষস্থানীয় দেশ কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে আমেরিকা এবং চিন আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। এর পরেই রয়েছে ফ্রান্স, ব্রিটেন, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং জার্মানি। এজন্যই আমরা AI নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও একই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে , আমেরিকার AI বাজারে দখল রয়েছে এবং কিছু চিনা কোম্পানিরও এখানে শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রধানমন্ত্রী মোদী চান ভারত এই নতুন প্রযুক্তি থেকে উপকৃত হোক।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ বলেন, ভারতের সঙ্গে একসঙ্গে আমরা প্রযুক্তি সার্বভৌমত্ব বিকাশ করব। আমরা এখানকার লোকদের প্রশিক্ষণ দেব। আমরা ভারত এবং ফ্রান্সে ডেটা সেন্টার তৈরি করব এবং আমাদের ভাষায় ভাষা মডেল তৈরি করব। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা চিনা মডেলের উপর নির্ভর করতে চাই না। এই দিকে গ্লোবাল সাউথ একটি বড় বাজার হবে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন,এই প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতায়, ভারত এবং ফ্রান্স একসঙ্গে তৃতীয় ফ্রন্টের জন্য একটি নীলনকশা প্রস্তুত করতে পারে যাতে তারা আমেরিকা এবং চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। আমি বিশ্বাস করি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই ভবিষ্যৎ। এই কারণেই আমি ২০১৮ সালে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল শুরু করেছিলাম। আমি চাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের চেয়ে ভাল জীবনযাপন করুক।
এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর সপ্তম ফ্রান্স সফর। তিনি শেষবার ২০২৩ সালে ফরাসি জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে এই শীর্ষ সম্মেলন ২০২৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় এবং ২০২৩ সালে ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।