তাঁকে হত্য়া করতে পারলেই নাকি থেমে যাবে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ। তিনি নাকি লুকিয়ে রয়েছেন ব্যাঙ্কারে। আর সে তথ্য পেয়ে গিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানিয়েছেন, এখনই মারবেন না তাঁকে। যাঁকে নিয়ে এত কথা, এবার মুখ খুললেন ইরানের সেই সর্বোচ্চ লিডার আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই। মেঘনাদের মতো নয়, বরং সরাসরি এক্স হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করে হুঁশিয়ারি দিলেন ইজরায়েলকে। বললেন, 'দ্য ব্যাটল বিগিনস...।' অর্থাৎ যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে শুধু যুদ্ধ শুরুই নয়, তিনি যে বিনা যুদ্ধে শুচাগ্র মেদিনীও দেবেন না, তা-ও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন খামেনেই। এক্স হ্যান্ডলের ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, 'আলি রিটার্নস টু খাইবার।' ফারসি ভাষায় লেখা পোস্টের অনুবাদ বলছে, 'খাইবারে ফিরেছেন আলি।' শিয়া ইসলামের প্রথম ইমামের বিষয়ে এই বক্তব্য রাখা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, তিনি খাইবারে ফিরেছেন। খাইবার অর্থাৎ ইহুদি শহর যা শিয়া ইসলামের প্রথম ইমামের রাজত্ব ছিল সপ্তম শতাব্দীতে। এই এক্স পোস্টে এক ব্যক্তির ছবিও রয়েছে, যাঁর হাতে রয়েছে একটি তলোয়ার। রাজপ্রাসাদের দ্বার দিয়ে প্রবেশ করছে সেই ব্যক্তি। আকাশে আগুনের গোলা এবং কালো ঘন মেঘও রয়েছে ছবিতে।
এই পোস্টের কয়েক মুহূর্ত পরই আরও একটি পোস্ট করেন আয়াতোল্লাহ খামেনেই। তিনি বলেন, 'সন্ত্রাসবাদী ইহুদি শাসককে কড়া জবাব দেওয়ার সময় হয়েছে। কোনওরকম রেয়াত করা হবে না ইহুদিদের।'
এদিকে, ইজরায়েল কড়া হাতে দমন করছে ইরানকে। সে দেশের একের পর এক রেভলিউশনারি গার্ড এবং সেনার শীর্ষ কর্তাদের হত্যা করা হচ্ছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানের জনগণকে সতর্ক করেছেন। জানিয়েছেন, ইরানের শাসককে উপড়ে ফেলবে ইজরায়েল। প্রশ্ন উঠছে, সত্য়িই যদি ইজরায়েলের হাতে নিহত হন আয়াতোল্লা খামেনেই, সেক্ষেত্রে তাঁর গদিতে কে বসবে?
৩টি সংগঠনের নাম উঠে আসছে যারা খামেনেই পরবর্তী সময়ে ইরানে শাসন করতে পারে।
এক: মুজাহিদিন-এ-খল্ফ বা পিপলস মুজাহিদিন। ১৯৬০ সালে ইসলামিক-মার্কসবাদী সংগঠন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছিল এই গোষ্ঠী।
দুই: MEK। এরা পুঁজিবাদ বিরোধী, আমেরিকা বিরোধী। ১৯৭০ সালে এরা আত্মঘাতী হামলা চালাত ইরানি পুলিশের উপর। মার্কিন বিমানে হামলা করে ৬ আমেরিকানকে হত্যাও করেছিল এই দল। এরাই নির্বাসিত আয়াতোল্লাহ রুহোল্লাহ খামেনেইয়ের ফেরার পথ প্রশস্ত করেছিল। কিন্তু তাদেরই আবার পথের কাঁটা হিসেবে সরিয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন খামেনেই।
তিন: পূর্ব শাহের পুত্র। ১৯৭৯ সালে ইরানে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটেছিল। সে সময়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন পূর্ব শাহের ছেলে। বর্তমানে তিনি থাকেন আমেরিকায়। পিতার গদি ফেরত পাওয়ার জন্য তিনি ফের প্রচেষ্টা চালাতে পারেন। গণতান্ত্রিক পথেই অবশ্য ইরানে শাসনকাজ চালাতে চান তিনি। আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চান। ইজরায়েলের সঙ্গেও শান্তি বজায় রাখতে চান পূর্ব শাহের ছেলে।