ভারতের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি করলেন আমেরিকার উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিক স্ফিফেন মিলার। রাশিয়া থেকে তেল কেনার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশিই মার্কিন ওই আধিকারিকের দাবি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে অর্থ সাহায্য করেছে ভারত। মস্কো থেকে তেল ক্রয় করে এমন সমস্ত দেশের উপরই ধীরে ধীরে চাপ বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে আমেরিকা। এই মর্মে ভারতের সঙ্গেও চলছে টানাপোড়েন। তার মাঝেই এবার মার্কিন প্রশাসনিক আধিকারিকের এহেন মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে বিশ্বে।
এই স্টিফেন মিলার আমেরিকার অত্যন্ত প্রভাবশালী। ট্রাম্পের পরামর্শদাতা এবং ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন ভারতের উচিত অবিলম্বে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেওয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন এই তেল কেনার মাধ্যমে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে রাশিয়াকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করে চলেছে ভারত। যা এই মুহূর্তে থামানো দরকার।'
ট্রাম্পের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ স্টিফেন মিলার যেন খানিকটা বিস্মিত। কেন ভারত রাশিয়ার সঙ্গে তেল নিয়ে চুক্তি করেছে, তা ভেবে তাজ্জব বনে গিয়েছেন তিনি। ফক্স নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে স্টিফেন মিলার বলেন, 'গোটা বিশ্বের মানুষ অবাক হয়ে যাচ্ছে এটা দেখে, ভারত চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে! এটা অবাক করে দেওয়ার মতো একটা বিষয়।'
তবে আমেরিকার চাপ বৃদ্ধি করার পরও ভারতের পক্ষ থেকে রাশিয়ার সঙ্গে তেলের চুক্তি বাতিল করার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। রয়টার্স সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সরকারি সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার কোনও অভিপ্রায় নেই ভারতের।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে স্টিফেন মিলার রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পক্ষে জোরাল সওয়াল করেছেন। এই বন্ধুত্ব থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে চলেছে, তা জেনে তিনি বীভৎস অবাক হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন স্টিফেন মিলার।
গত ৩০ জুলাই ডোনাল্ড ট্রাম্পে ঘোষণা করেন, ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক লাগু হবে। আবার এ-ও জানিয়ে দেন ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করলে পেনাল্টি বসবে তাদের শুল্কের উপর। শুল্কের ঘোষণার পরই নয়াদিল্লির সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক নিয়ে তীব্র আক্রমণও করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারতের অর্থনীতিতে 'ডেড ইকনমি' বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও রাশিয়ার থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তিনি ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি নিয়ে অসহনীয়তা দেখিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় করার পরিমাণ বাড়িয়েছে ভারত। রয়টার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের আগে ৩ শতাংশ তেল আসত রাশিয়া থেকে। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ।