প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ভারতের মিসাইল পাকিস্তানে ক্র্যাশ হওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কথা বললেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেকমুদ কুরেশি। বিষয়টি জাতিসংঘের মহাসচিবকে জানানোর পাশাপাশি পাক বিদেশমন্ত্রী বলেন, এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বিমান চলাচলের নিরাপত্তার প্রতি ভারতের অবহেলারই প্রমাণ।
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে ফোনালাপে বলেন, ভারতের এই কাজ দায়িত্বজ্ঞানহীন। তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্য়মে সুরাহা করা দরকার। জাতিসংঘের মহাসচিবকে কুরেশি বলেন, পাকিস্তান এই বিষয়ে ভারতের কাছে যৌথ তদন্ত দাবি করছে।
পাকিস্তানের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, ভারত যদি যৌথ তদন্তে রাজি না হয়, তাহলে পাকিস্তান অন্যান্য বিকল্পও বিবেচনা করছে। সোমবার পাকিস্তানি সংবাদপত্র দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে ওই কর্তা বলেন, "আমরা এখনও ভারতের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।" তিনি বলেন, এটি একটি সাধারণ সমস্যা নয় যেটিকে উপেক্ষা করা যায়। তিনি আরও বলেন, "যদি ভারত যৌথ তদন্তে রাজি না হয়, আমরা বিভিন্ন বিকল্পের কথা ভাবছি,"। তবে পাকিস্তান ঠিক কী ধরনের বিকল্পের কথা ভাবছে, তা অবশ্য খোলসা করে বলেননি ওই পাক কর্তা।
পাকিস্তানি ওই কর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তান বিষয়টি জাতিসংঘে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন যে, পাকিস্তান সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পর্কে ইতিমধ্যেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের অবহিত করেছে।
৯ মার্চের ঘটনা
প্রসঙ্গত, গত ৯ মার্চ প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ভারতের একটি ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের মিয়া চান্নুতে গিয়ে পড়ে। পাকিস্তান জানিয়েছে যে ক্ষেপণাস্ত্র ক্র্যাশে কয়েকটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভারত এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং জানিয়েছে যে রুটিন রক্ষণাবেক্ষণের সময় ভুলবশত ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ হয়ে গিয়েছিল। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই ঘটনায় ভারতের ব্যাখ্যাকে অপর্যাপ্ত বলে আখ্যা দিয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে যৌথ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। পাকিস্তান ভারতের কাছে এই ঘটনা সম্পর্কিত প্রশ্নের একটি তালিকা জমা দিয়েছে এবং বলেছে যে ভারতের একতরফা তদন্ত অপর্যাপ্ত।
আন্তর্জাতিকমহলের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ পাকিস্তান
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে, ভারতের ভুলের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে পশ্চিমী দেশগুলির নীরবতা আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ওই সংবাদমাধ্যমে আরও লিখেছে, অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, পাকিস্তান যদি এমন ভুল করত, তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া অবশ্যই ভিন্ন হতো।
আরও পড়ুন - বাগডোগরায় রানওয়েতে ফাটল, ব্যাহত বিমান পরিষেবা