ফের আফগানিস্তানে বোমা হামলা চালাল পাকিস্তান। ভাঙল শান্তিচুক্তি। তালিবান জানিয়েছে, পাকিস্তানই প্রথম আঘাত করেছে। ফলে যুদ্ধবিরতি আর লাগু থাকল না। সম্প্রতি দু’দেশের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। দু’পক্ষই একে অপরকে জানিয়েছিল যে, আপাতত গুলি চলবে না। কিন্তু শনিবার ভোরেই আচমকা বিমানহানা চালায় পাকিস্তান। আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালানো হয়। এই অঞ্চলটি ডুরান্ড লাইনের কাছে। তালিবান জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিমান হামলায় একাধিক গ্রাম কেঁপে ওঠে।
আরও পড়ুন: তালিবানরা তো মারছেই, ভারত আরও মারবে? বুঝতে পেরে বিতর্কিত মন্তব্য পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
স্থানীয় সূত্রের খবর, পাকতিকার আরগুন ও বারমাল এলাকায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠিক কতজন মারা গিয়েছেন, তা এখনও জানা যায়নি। তবে এই ঘটনায় রীতিমতো ভয়ের পরিবেশ সীমান্ত জুড়ে।
এদিকে, হামলার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই দোহায় পৌঁছেছিল পাকিস্তানের একটি প্রতিনিধি দল। আলোচনায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল আফগান দলেরও। তার মধ্যেই বোমা পড়ল সীমান্তে। ফলে শান্তি আলোচনাও অনিশ্চিত হয়ে গেল।
গত ১১ অক্টোবর থেকেই শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। আফগান বাহিনী প্রথমে পাকিস্তানের কয়েকটি সেনা পোস্টে হামলা চালায়। তারপর থেকেই চলেছে গুলি-বোমা। দু’পক্ষেরই প্রাণহানি হয়েছে। তালিবান দাবি করেছে, তারা ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনাকে হত্যা করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান জানায়, তাদের ২৩ জন সেনা মারা গিয়েছে, কিন্তু তারা ২০০ জনেরও বেশি তালিবান যোদ্ধাকে মেরেছে।
এর আগের দিনই পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা হয়। একটি সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ওই হামলায় ৭ জন সেনা মারা যান, আহত হন ১৩ জন। তালিবান গোষ্ঠী টিটিপি সেই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, এই হামলা চালিয়েছে তাদের ‘খালিদ বিন ওয়ালিদ’ ও ‘গুলবাহাদর’ ইউনিট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানে তালিবান সরকার গঠনের পর থেকে সীমান্তে অশান্তি থামেনি। মাঝে ছোট ছোট যুদ্ধবিরতি হলেও তা স্থায়ী হয়নি। এবারের হামলাকে দুই দেশের সম্পর্কের জন্য বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।
দু’দেশই এখন যুদ্ধ নয়, আলোচনার পথে ফিরবে কিনা, সেটাই দেখার। সীমান্তের মানুষ চান, এবার যেন সত্যিই শান্তি আসে।