রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। প্রায় এক ঘণ্টা দু'জনের মধ্যে কথা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান,সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। আমরা ৫ বছর পর সাক্ষাৎ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী মোদী মনে করিয়ে দেন, 'পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং সংবেদনশীলতা আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি হওয়া উচিত'। প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন জিনপিংকে জানান,'আমরা সীমান্ত সমঝোতাকে স্বাগত জানাচ্ছি'। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারত-চীন সম্পর্কের গুরুত্বের কথাও জানিয়ে দেন। তাঁর কথায়,'আমরা পাঁচ বছর পর আনুষ্ঠানিক বৈঠক করছি। আমার বিশ্বাস, ভারত-চিন সম্পর্ক কেবল আমাদের জনতার জন্যই নয়; বৈশ্বিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অগ্রগতির জন্যও অত্যন্ত দরকারি'।
বৈঠকে দুই নেতাই সহমত হন, ভারত-চীন সীমান্ত প্রশ্নে বিশেষ প্রতিনিধি শান্তি ও স্থিতিশীলতা রাখার বিষয়টি দেখবেন। এই সমস্যার একটি ন্যায্য, যুক্তিসঙ্গত এবং পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজতে শীঘ্রই বৈঠক হবে। বলে রাখি, ২০১৯ সালের অক্টোবরে তামিলনাড়ুর মামল্লাপুরমে শেষবার মোদী-জিনপিং আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেছিলেন। তারপর ২০২০ সালে গালওয়ানের ঘটনার পর দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। কিন্তু দিন কয়েক আগেই সীমান্ত সমঝোতার মাধ্যমে বরফ গলেছে।
লাদাখ সীমান্তে অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত ও চিন। মঙ্গলবার এই চুক্তির কথা জানিয়েছে বেজিং। তারা জানিয়েছে, পূর্ব লাদাখে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা শেষ করার চেষ্টা চলছে। সেই লক্ষ্যেই ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি করা হয়েছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানিয়েছেন, 'সাম্প্রতিক অতীতে, চিন ও ভারত, দুই দেশের সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে কূটনৈতিক এবং সামরিক চ্যানেলের মাধ্যমে গভীর আলোচনায় অংশ নিয়েছে। এখন দুই পক্ষই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে একটি রেজোলিউশনে পৌঁছেছে। চিন এই দৌত্যকে সমর্থন করে।'
দুই দেশের সেনাবাহিনী পূর্ব লাদাখের দক্ষিণ প্রান্তে টহল দিতে পারবে। সোমবার এ কথাই বলেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি জানিয়েছেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নের পরে ভারতীয় সেনারা আবারও ওই জায়গায় যেতে পারবে, যেখানে ২০২০ সালের আগে টহল দিত। এর আগে চিনের সঙ্গে এই চুক্তি সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার সময় বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি বলেছিলেন,২০২০ সালে এই অঞ্চলগুলিতে উদ্ভূত সমস্যাগুলির সমাধান হয়েছে। চুক্তির আওতায় দুই দেশের সেনাবাহিনী ডেপসাং ও ডেমচোকে তাদের পুরনো জায়গায় ফিরে যাবে।