অন্তঃসত্ত্বা প্রেমিকাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন প্রেমিক। আর 70 বছর পর ফেসবুক মিলিয়ে দিল একে অপরকে। এমনই ঘটনা সম্প্রতি সামনে এসেছে। কিন্তু এমন কী ঘটেছিল যে কারণে 70 টা বছর একে অপরকে ছেড়ে এইভাবে আলাদা থাকলেন, সেটাই জানাবো আপনাদের। জানা যায়, দুজনের মধ্যে প্রেমের শুরুটা হয়েছিল যুদ্ধের আবহে। বোমা আর বারুদের গন্ধ গায়ে মেখেই একসঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, আর নিয়তি হয় অন্য। দুয়ানে মান এবং পেগি ইয়ামাগুচি তার অন্যতম উদাহরণ হতে পারেন। 1953 সালে 22 বছর বয়সি দুয়ানে কোরিয়ান যুদ্ধে যোগ দিতে জাপানে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় পেগির সঙ্গে। দেখেই পেগির প্রেমে পড়ে যান দুয়ানে। ভিনদেশে যুদ্ধ করতে এসে প্রেমপ্রস্তাব দিয়ে বসেন অচেনা মেয়েকে। দুয়ানের প্রস্তাবে সাড়া দিতে দেরি করেননি পেগিও। প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয় সেখান থেকেই। সম্পর্কের বয়স যখন মাস ছয়েক, পেগি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। আর ঠিক সেই সময় টোকিয়োতে দুয়ানের থাকার মেয়াদ শেষ হয়। দুয়ানেক দেশে ফিরে যেতে বলা হয়। পরিকল্পনা মাথায় রেখেই দেশে ফেরেন তিনি। কিন্তু এসে দেখেন, তাঁর বাবা সমস্ত জমানো টাকা-পয়সা খরচ করে ফেলছেন। আর কিছুই পরে নেই। টাকাপয়সা ছাড়া পেগির সামনে গিয়ে দাঁড়াতে চাননি দুয়ানে। তাই বুকে পাথর চাপা দিয়ে হলেও পেগির সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তবে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হতে দেশেই একটি চাকরিতে যোগ দেন তিনি। যোগাযোগ না থাকলেও পেগির জন্য দুয়ানের ভালবাসা অটুট ছিল। পেগিকে এবং তাঁর সন্তানের খবর নেওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। কোনও খবর পাননি। শেষ পর্যন্ত কয়েক দশক পরে ফেসবুকের মাধ্যমে পেগিকে খুঁজে পেলেন 92-এর দুয়ানে। ফেসবুক ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেগির প্রোফাইলটি চোখে পড়ে। দুয়ানে নিজের পরিচয় দিয়ে মেসেজ করেন। এক সপ্তাহ পরে উত্তর আসে। অনেক বছর পর কথা হয় দুজনের। দুয়ানেকে দেখতে তাঁদের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন বৃদ্ধা পেগি। এত বছর পর ফের কাছাকাছি আসে দুই মন। দুয়ানে এবং পেগি দুজনেই বলেছেন, যে কদিন বাঁচব, একসঙ্গে হাতে হাত রেখে থাকতে চাই। তাদের এই প্রেমকাহিনী নেট দুনিয়ার সামনে আসতেই ব্যাপক ভাইরাল হয়। তাদের এই গল্প শুনে অনেকেরই চোখে জল চলে আসে। সঙ্গে তারা বিভিন্ন কমেন্টও করেছেন।