সামনেই বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন। ডিসেম্বরের শীতেও রাজনৈতিক উত্তেজনায় ফুটছে প্রতিবেশী দেশটি। এই নির্বাচনে আওয়ামী লিগ জোট করে লড়বে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। অবশেষে তার অবসান ঘটলো। ১৪ বছর নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতায় থাকা শেখ হাসিনার দল এবারের নির্বাচনে শেষপর্যন্ত শরিকদের আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে।
আওয়ামী লিগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছেন, ১৪ দলের জোটের শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা সম্পন্ন হয়েছে। শরিকরা পেয়েছে সাতটি আসন। জাতীয় পার্টি-জেপি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ এই তিনটি দলকে ৭টি আসন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে জাসদ ও ওয়ার্কাস পার্টি ৩টি করে আসন পেয়েছে। বৃহস্পতিবার শেষপর্যন্ত শরিকদের জন্য আসন ছাড়ার ঘোষণা আসে আওয়ামী লিগের তরফ থেকে। জানা যাচ্ছে, জোট সঙ্গী তরিকত ফেডারেশনকে এবার আসন দেওয়া হয়নি।
২০০৮ সাল থেকেই বাংলাদেশে ১৪ দল ও আওয়ামী লিগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দুটিতে জোটের শরিক হিসেবে ছিল জাতীয় পার্টিও। তবে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের পর জাতীয় পার্টি জোটে ছিল না। এবারও বিএনপি ভোটে লড়ছে না, জাতীয় পর্টিকেও জোটে রাখা হয়নি।
২০১৪ সালে জোট না থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আছে, এমন ৩৪টি আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লিগ। সেসব আসনেই জয় পায় দলটি। একাদশ নির্বাচনে জোট করার পর তাদেরকে দেওয়া হয় ২৬টি আসন, এর মধ্যে তারা জয় পায় ২৩টিতে। এবার দলটিকে কোথাও ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে অবশ্য সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি আওয়ামী লিগ। গত নির্বাচনে ১৪ দলের শরিকদেরকে ১৬টি আসনে ছাড় দেয় আওয়ামী লিগ। এর মধ্যে ১৪টিতে প্রার্থীরা ভোট করে আওয়ামী লিগের নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির (জেপি) ২ জন প্রার্থী তাদের দলীয় প্রতীক বাইসাইকেল নিয়ে ভোটে অংশ নেয়। এবার ১৪ দলীয় জোটের তিন শরিকের জন্য ৩০০ আসনের জাতীয় সংসদের সাতটি আসন ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে হাসিনা দল। আওয়ামী লিগ নেতৃত্বের একাংশের ইঙ্গিত, ভোটের আগে আরও কয়েকটি আসন শরিকদের ছাড়া হতে পারে।
যে সাতটি আসন ছাড়া হয়েছে তারমধ্যে শুধুমাত্র কুষ্টিয়া-২ আসনে আগে থেকেই কোনো প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লিগ। জোট শরিকদের জন্য এই আসনগুলো ছেড়ে দিতে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে, আওয়ামী লিগের যে নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তাদের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না বলেই জানিয়েছে দলীয় সূত্র। গত ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লিগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'শরিকদের আপত্তি থাকলেও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে দলীয় প্রার্থীদের অস্বস্তি অমূলক। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো বিকল্প নেই। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কারো সুযোগ নেই।'