৫৪ জন ইসকন সদস্যকে ভারতে আসতে দিল না বাংলাদেশ। সীমান্তেই আটকে দেওয়া হল। সমস্ত বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভারতে আসছিলেন তাঁরা। এখানে এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। কিন্তু বেনেপোল সীমান্তেই তাঁদের আটকে দেয় বাংলাদেশের সীমান্ত পুলিশ। শনিবার রাতে এবং রবিবার সকালে এই ইসকন সদস্যরা বেনাপোল সীমান্তে এসে পৌঁছান। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর তাঁদের জানানো হয় যে, তাঁদের সীমান্ত পারের অনুমতি নেই।
সীমান্ত পুলিশের বক্তব্য
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইসকনের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার মতো পদক্ষেপ। বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, "আমরা বিশেষ শাখার সঙ্গে পরামর্শ করেছি এবং ওপর মহল থেকে নির্দেশ পেয়েছি তাদের ভারতে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ার।"
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা দাবি করেন, ইসকনের সদস্যদের বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা থাকা সত্ত্বেও "সরকারি অনুমতির অভাব" তাদের ভ্রমণে বাধা সৃষ্টি করেছে।
কর্মকর্তা বলেন, "এমন অনুমতি ছাড়া তারা এগোতে পারবে না।"
ইসকন সদস্যদের প্রতিক্রিয়া
ইসকন সদস্য সৌরভ তপন্দার চেলি বলেন, "আমরা ভারতের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসেছিলাম, কিন্তু ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সরকারি অনুমতির অভাবে আমাদের থামিয়ে দেন।"
ইসকনের ওপর প্রশাসনিক চাপ ও বিতর্ক
ইসকনের প্রাক্তন সদস্য এবং হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জামিন দেওয়া হয়নি এবং জেলে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পর বিক্ষোভের জেরে একজন আইনজীবীর মৃত্যু হয়। এর ফলে বাংলাদেশে ইসকনের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি ওঠে। তবে, হাইকোর্ট ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে।
বাংলাদেশ সরকার ১৭টি ইসকন সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছে, যার মধ্যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অ্যাকাউন্টও রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা ৩০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের ইসকনের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দা কুড়িয়েছে। ভারত ও অন্যান্য দেশ এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।