আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই ঘোষণা করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিল, বৃহস্পতিবারের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,'বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে, বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমে নিপীড়ন, ছাত্রাবাসের সিট বিক্রি, টেন্ডার দুর্নীতি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন-সহ নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে সেগুলি প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে যোগ রয়েছে সংগঠনটির। তাদের নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণ হয়ে গিয়েছে'।
ছাত্রলীগকে কার্যত সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ অনুযায়ী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শাখা সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। এই আইনের তফসিল-২–এ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামের সংগঠন থাকবে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকায়।
বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছিল বলেও সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা আন্দোলনকারীদের উপর বেপরোয়া সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। নিরপরাধ ব্যক্তিদের হত্যা করেছে। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও সরকারের বিরুদ্ধে স্বৈরতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ উঠেছিল। ১৫ বছরের কার্যকালে বিরোধী দলকে কোণঠাসা করেছেন শেখ হাসিনা এমনটা অভিযোগ। বাংলাদেশের অনেকেই বলছেন, ক্ষমতায় এসে সেই পথই তো ধরল অন্তর্বর্তী সরকার। তারাও বিরোধী ছাত্রসংগঠনকে নিষিদ্ধ করল। এটাও কি বাকৃ স্বাধীনতা হরণ নয়?