বাংলাদেশে ব্যাপক হিংসার পর পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান শেখ হাসিনাকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনার বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিত হচ্ছে বিজয় উদযাপন। এই হিংসায় তিন শতাধিক মানুষ মারা গেছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বোনও ঢাকা ছেড়েছেন। বাংলাদেশের সেনাপ্রধান শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, তিনি যেন সম্মানজনকভাবে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করেন। এদিকে কোনো অনির্বাচিত সরকার যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে। জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন সেনাপ্রধান। । সেইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা করেন তিনি।
এদিকে হাসিনা ঢাকা ছাড়তেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বিক্ষোভকারীদের দখলে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর মূর্তিতে প়ড়ল হাতুড়ির ঘা। টুকরো টুকরো করা হচ্ছে মুজিবুর রহমনের মূর্তি। এদিকে দেশ ছাড়ার আগে নিজের ভাষণ রেকর্ড করাতে চাইলেও সুযোগ পেলেন না শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের গেট ভেঙে দখল করে নেয় জনতা। বন্ধ করে দেওয়া হল বাংলাদেশের মোবাইল পরিষেবা। বাংলাদেশের রাস্তা এখন সেনাবাহিনীর দখলে। রাস্তায় নেমে পড়েছে সাঁজোয়া গাড়ি। পুলিশের পরিবর্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রবিবার থেকে শুরু হওয়া হিংসায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শতাধিক মানুষ মারা যায় এবং কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি পুড়ে যায়। সব বড় বড় শহরে লাখ লাখ মানুষ শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নামেন। রাজধানী ঢাকা সম্পূর্ণরূপে বিক্ষোভকারীদের দখল চলে যায়। গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলাকালে হিংসায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ কারণে দেশটির আওয়ামী লিগ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনার মুখে পড়ে।
সেনাপ্রধান রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলছেন
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, দেশটির সেনাপ্রধান বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেরেন। এরপর সেনাপ্রধান ভাষণ দেন। সেনাপ্রধান তার ভাষণে ক্ষমতা পরিবর্তনের ঘোষণা করেন। সেইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশে বিতর্কিত কোটা ব্যবস্থা নিয়ে গত মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারপন্থী আন্দোলনকারীদের সহিংস সংঘর্ষ হয়। এসব বিক্ষোভে ভিড় বাড়তে থাকে এবং শুরু হয় হিংসা। সুপ্রীম কোর্ট কোটা কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে বলে মনে হয়েছিল, কিন্তু রবিবার লাখ লাখ মানুষ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে এবং শেখ হাসিনার হাতের বাইরে চলে যায়।