বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের পতন হয়েছে। অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে এসেছেন শেখ হাসিনা। প্রতিবেশী দেশে ভয়াবহ হিংসা ও অগ্নিসংযোগের মধ্যে শেখ হাসিনা যাতে নির্বিগ্নে ভারতে প্রবেশ করতে পারেন তার ব্যবস্থা করে দিয়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। তিনি বর্তমানে হিন্দন এয়ারবেসের সেফ হাউসে রয়েছেন। এদিকে আজতককে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ দয়। এই আলাপচারিতায় তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মা শেখ হাসিনার পক্ষে সওয়াল করে সজিব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'আমার মা বাংলাদেশের সেরা সরকার পরিচালনা করেছেন। তিনি কোনো ভুল করেননি। তিনি শক্তি ও সাহসিকতার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। কিন্তু এখন তার বয়স ৭৭ বছর। বাংলাদেশের জন্য তার যা করার ছিল তাই করেছেন। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাবেন তিনি। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা দেখে তিনি খুবই হতাশ ও নিরাশ।'
হাসিনা কি লন্ডনের থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন?
শেখ হাসিনার ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার প্রশ্নে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'লন্ডন থেকে যে রিপোর্ট আসছে তা ভুল। তিনি এখনও কারও কাছে আশ্রয় চাননি। আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ মিত্র। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের কথা বলতে গিয়ে সজিব ওয়াজেদ বলেন, এখন সেখানে সংখ্যালঘুদের মন্দিরে হামলা হচ্ছে।
'জামায়াতে ইসলামীর পুরো ভূমিকা'
হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আরও বলেন, 'বাংলাদেশে বিক্ষোভ থামাতে বলপ্রয়োগ জরুরি ছিল। কিন্তু আমার মা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে তিনি ছাত্রদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করবেন না। তাই শিক্ষার্থীদের ওপর বলপ্রয়োগ না করে পদত্যাগ করাই ভালো বলে মনে করেন তিনি। পুরো ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা রয়েছে। ওই মানুষগুলো চরমপন্থী। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এতে মোটেও জড়িত নয়।'
দলীয় কর্মীদের টার্গেট করা হচ্ছে
বাংলাদেশে ক্রমাগত হিংসা প্রসঙ্গে সজিব ওয়াজেদ জয় বলেন, 'আমাদের দলের কর্মীরা জঙ্গিদের টার্গেট হচ্ছে। ১৯৭৫ সালেও আমাদের দলের নেতাদের হত্যা করা হয়। আমরা চাই না একই ধরনের পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি হোক। আমরা অবশ্যই আমাদের নেতাদের রক্ষা করব। কিন্তু বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আর আমাদের দায়িত্ব নয়।'
কী হবে বাংলাদেশের ভাগ্যে?
কী হতে পারে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ? এ বিষয়ে সজিব বলেন, 'আমরা কোনোভাবে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে রাজি করিয়েছি। বাংলাদেশ এখন পরবর্তী পাকিস্তানে পরিণত হবে। এটাই তার ভাগ্য। আমরা মোটেও সেনাবাহিনী নিয়ে আলোচনা করব না।'
চিনও কি হিংসার পিছনের কারণ?
চিন সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, চিন কখনো হস্তক্ষেপ করেনি। আকা এরসঙ্গে জড়িত নন। চিনের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণকে বার্তা দিয়ে সজিব ওয়াজেদ বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে তিনি (হাসিনা) অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে বাঁচাতে আসবেন না।