scorecardresearch
 

Durga Pujo in Bangladesh:'সেই জৌলুস হারাচ্ছে,' বাংলাদেশের পুজো নিয়ে আক্ষেপ নৃসিংহপ্রসাদের

পশ্চিমবঙ্গের মতো বাংলাদেশের হিন্দুরাও মাতেন দেবী বন্দনায়। এবারও ৩২ হাজারেরও বেশি দুর্গাপুজো হচ্ছে প্রতিবেশী দেশটিতে। বাংলাদেশে প্রথম কবে দুর্গা পূজা শুরু হয় যদিও এ নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। কারো মতে, ১৫ শতকে বর্তমান সিলেট (শ্রীহট্টের) রাজা গণেশ প্রথম দুর্গাপুজো করেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই। তবে বিভিন্ন গবেষকদের বিভিন্ন লেখা থেকে জানা যায়, রাজশাহীর তাহেরপুরেই রাজা কংস নারায়ণ দুর্গাপুজোর সূচনা ঘটান।

Advertisement
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দুর্গাপুজো কোনটি? বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দুর্গাপুজো কোনটি?

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজো। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানেই বাঙালি রয়েছে সেখানেই আয়োজন করা হয় এই পুজোর। পশ্চিমবঙ্গের মতো বাংলাদেশের হিন্দুরাও মাতেন দেবী বন্দনায়। এবারও ৩২ হাজারেরও বেশি দুর্গাপুজো হচ্ছে প্রতিবেশী দেশটিতে। বাংলাদেশে প্রথম কবে দুর্গা পূজা শুরু হয় যদিও এ নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। কারো মতে, ১৫ শতকে বর্তমান সিলেট (শ্রীহট্টের) রাজা গণেশ প্রথম দুর্গাপুজো করেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই। তবে বিভিন্ন গবেষকদের বিভিন্ন লেখা থেকে জানা যায়, রাজশাহীর তাহেরপুরেই রাজা কংস নারায়ণ দুর্গাপুজোর সূচনা ঘটান। 

একসময় তাহেরপুরে বসেই রাজ্য পরিচলনা করতেন রাজা কংস নারায়ণ ও তার পরবর্তী রাজা-জমিদাররা। ১৪৮০ খ্রিষ্টাব্দে (৮৮৭ বঙ্গাব্দ) মানবকল্যাণে তিনি তাহেরপুরে রাজা কংস নারায়ণ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কথিত আছে, মন্দিরটি অসুরের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তির লক্ষে  প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এবং এরপর থেকে এই উপমহাদেশে সার্বজনীন শারদীয় দুর্গা উৎসবের শুরু। রাজা কংস ছিলেন বাংলার ১২ ভূঁইয়ার এক ভূঁইয়া। গবেষকদের একটা সূত্র মানলে, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী জেলার তাহেরপুরেই সর্বপ্রথম দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন রাজা কংস নারায়ণ রায় বাহাদুর।

তবে বাংলাদেশের দুর্গাপুজো নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই উঠে আসে রাজধানী ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপুজোর কথা। যা আদতে প্রায় আট শতাব্দী পুরনো। এটি বাংলাদেশের 'জাতীয় মন্দির'ও বটে। এই মন্দিরে প্রথম দিকে অষ্টভুজার প্রতিমা এবং পরবর্তী সময়ে দশভুজা দুর্গা প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছিল। ঐতিহাসিকদের মতে, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজিতা দুর্গার আরেক রূপ দেবী ঢাকেশ্বরীর নাম অনুসারেই ঢাকা শহরের নামকরণ করা হয়।

আরও পড়ুন

ঢাকেশ্বরী মন্দির ঢাকার সবচেয়ে পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মন্দির এবং এক ঐতিহাসিক স্থান। এটি বাংলাদেশের জাতীয় মন্দির নামেও পরিচিত। ঢাকেশ্বরী শব্দের অর্থ দাঁড়ায় "ঢাকার ঈশ্বরী"। সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীদের ধারণা ঢাকার নামকরণ এই মন্দিরের নাম থেকেই হয়েছে। তবে বাংলাদেশে সার্বজনীন পুজো ব্যাপক আকারে শুরু হয় ১৯৪৭-এর দেশ ভাগের পর। দেশ ভাগের পর এককভাবে পুজো করাটা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে ওঠে। এর ফলে ব্রাক্ষ্মণ-অব্রাক্ষ্মণ নির্বিশেষে মিলেমিশে পূজা করার চল শুরু হয়। তবে এখনো পারিবারিক পুজোর চল রয়ে গেছে পুরোন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। ৭১ এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর  ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুরু হয় দেশের কেন্দ্রীয় দুর্গা পূজা।

Advertisement

বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ এবং লেখক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি জানান, দুই বাংলার দুর্গাপুজোর ইতিহাসই যথেষ্ট প্রাচীন। কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিল সেভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে কালের নিয়মেই বর্তমানে বাংলাদেশের দুর্গাপুজোর জৌলুস আজ অনেকটাই কমেছে। এই প্রসঙ্গে পাবনায় নিজের গ্রামের বাড়ির দুর্গাপুজোর স্মৃতিও উল্লেখ করেন লেখক।  পরিসংখ্যা বলছে, চলতি বছর বাংলাদেশে ৩২ হাজার দুশোর মতো মণ্ডপে দুর্গাপুজো হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় সংখ্যাটা ৩০টি বেশি। এ বছর রাজধানী ঢাকায় পুজোমণ্ডপের সংখ্যা ২৪৫টি। গত বছরের তুলনায় চারটি বেশি মণ্ডপে পুজো হচ্ছে। 

Advertisement