বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেই দেশের একের পর এক ফৌজদারি মামলা হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ ভারত থেকে হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে নিতে চাইতে পারে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ১৫ অগাস্টই বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। দেশের স্বরাষ্ট্র ও আইন—এই দুই মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, তাঁকে এখন দেশে ফিরিয়ে আনা দরকার। তৌহিদ হোসেন অবশ্য এ–ও বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে কূটনৈতিকভাবে ভারত বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়বে। তবে তিনি নিশ্চিত, ভারত ‘বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে।’
মঙ্গলবার পর্যন্ত হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা সহ অন্তত ২৭টি মামলা করা হয়েছে বাংলাদেশে। হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করার অভিযোগ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালেও। তাই তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে সেখানে বিচার করার দাবি করা হয়েছে। এবার এই ইস্যুতে কার্যত ভারতকে হুঁশিয়ারি দিল বিএনপি। তাদের দাবি বাংলাদেশের মানুষ হাসিনার বিচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই বাংলাদেশের সরকারের হাতে হাসিনাকে আইনিভাবে তুলে দেওয়ার জন্য ভারতকে ‘অনুরোধ’ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত ‘গণতন্ত্রের অঙ্গীকার’ রক্ষা করছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট, অত্যাচারী, নিপীড়নকারী, হত্যাকারী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে।’
প্রসঙ্গত বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারত প্রত্যর্পণ চুক্তি করেছে। দুই দেশের মধ্যে পলাতক ব্যক্তিদের প্রত্যার্পণ সহজ ও দ্রুত করতে ২০১৬ সালে চুক্তি সংশোধন করা হয়েছে। ভারতের বেশ কয়েকজন পলাতক ব্যক্তি, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর যেসব সদস্য বাংলাদেশে লুকিয়ে ছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে এই চুক্তি করা হয়েছিল। একইভাবে বাংলাদেশ জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশসহ (জেএমবি) বেশ কয়েকটি নিষিদ্ধ সংগঠন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ সরকার। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে ওই সব নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা লুকিয়ে ছিলেন।