বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। আগুনের লেলিহান শিখায় ৩ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুড়ে গিয়েছে বলে খবর। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে বলেই জানা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে রবিবার বাংলাদেশের একটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বড়সড় বিধ্বংসী লেগে যায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দাদের মধ্যে। দ্রুত শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে। অগ্নিকাণ্ডে কোনও হতাহতের খবর নেই বলেই জানাচ্ছে পুলিশ।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে প্রাপ্ত একটি সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে আকাশ বাতাস। আর অগ্নিকাণ্ডে আশেপাশে ভিড় করে রয়েছেন শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দারা। এই স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। আগুনে ৩,০০০ আশ্রয়কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুড়ে গিয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে রয়টার্সকে জানান, কক্সবাজারের একটি সীমান্ত জেলা যেখানে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাস করেন। তাঁদের অধিকাংশই মায়ানমার সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন ক্র্যাকডাউন থেকে পালিয়ে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন। প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, এর আগেও আগুন লেগেছে রোহিঙ্গা শিবিরে। তাতে মৃত্যুও হয় বেশ কয়েকজনের।
রোহিঙ্গা শিবিরে খুনোখুনি
এছাড়া অতীতে খুনোখুনির ঘটনাও বহিবার ঘটেছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে। সম্প্রতি সেখানকার জেলা পুলিশের এক প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩২টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ সাত মাসে ঘটেছে ৩২টি খুনের ঘটনা। খুন হওয়া এই রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা বা পাহারারত স্বেচ্ছাসেবক।
মায়ানমারে দমন-পীড়নের শিকার রোহিঙ্গা মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে চলেছেন। ২০১৭ সালের আগে চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বছর মায়ানমারে দমন-পীড়ন অভিযান শুরু হওয়ার পর সেই সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়।