বাংলাদেশ কি পাকিস্তানের আদর্শের পথে? শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকলাপ অন্তত সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যার নির্যাস, বাংলাদেশের 'জাতির পিতা' আর নন শেখ মুজিবুর রহমান। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও মুছে ফেলার জন্য একের পর এক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশের ৮টি জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের ৮টি জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্তের পথে হাঁটার প্ল্যান করে ফেলেছে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ৭ মার্চ ও ১৫ অগাস্ট। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জয় ও স্বাধীন বাংলাদেশ ঘোষণার ঐতিহাসিক দিন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার এই কার্যকলাপে নানা মহলে সমালোচনার ঝড়। সম্প্রতি বাংলাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাকিস্তানের আদর্শকে বাংলাদেশে কায়েম করার চেষ্টা: আওয়ামি লিগ
ইতিমধ্যেই ইউনূসের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই গ্যাজেট নোটিফিকেশন জারি করে সিদ্ধান্তগুলি জানিয়ে দেওয়া হবে দেশবাসীকে। ইউনূস সরকারের এই সব সিদ্ধান্তের নিন্দায় সরব আওয়ামি লিগ। আওয়ামি লিগ ফেসবুক পেজে লিখেছে, 'অবৈধ ইউমূস সরকার বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস মুছে ফেলছে। পাকিস্তানের আদর্শকে বাংলাদেশে কায়েম করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউনূস সরকার।'
শেখ মুজিবুরের মূর্তি ভাঙার ছবি ও ভিডিও গোটা বিশ্ব দেখেছে
বস্তুত, হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকায় শেখ মুজিবুরের মূর্তি ভাঙার ছবি ও ভিডিও গোটা বিশ্ব দেখেছে। গত ৫ অগাস্টের সেই দৃশ্য ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত, ৭ মার্চ মুক্তিযুদ্ধে দেশবাসীকে আহ্বানের শেখ মুজিবুরের সেই ভাষণের দিনটিকে এতদিন জাতীয় ছুটি হিসেবে পালন করা হত। তা আর হবে না। এছাড়াও ১৫ অগাস্ট শেখ মুজিবুর ও তাঁর পরিবারকে হত্যার দিনটিও বাংলাদেশে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ছুটি পালন করা হয়, সেই দিনটিও বাতিল করতে চলেছে ইউনূসের বাংলাদেশ।
এছাড়াও ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুরের জন্মদিনের জাতীয় ছুটি, ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস হিসেবে বাংলাদেশে যে জাতীয় দিবস পালন করা হয়, তাও তুলে দেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
'আমাদের স্বাধীনতা এসেছে সকলের চেষ্টায়'
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও টেলিকম দফতরের দায়িত্বে থাকা নাহিদ ইসলামের কথায়, 'অন্তর্বর্তী সরকারে শেখ মুজিবুরকে জাতির পিতা মানে না। আমাদের ইতিহাস শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালে, আমরা ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, তারপর ১৯৭১, ১৯৯০ ও এখন ২০২৪ সালেও লড়াই করলাম। আমাদের একাধিক জাতির পিতা। আমাদের স্বাধীনতা এসেছে সকলের চেষ্টায়। কোনও একজন ব্যক্তির চেষ্টায় নয়।'