কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ জুড়ে চলছে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী বাংলাদেশে ২৫ জন নিহত। প্রায় ২,৫০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। সরকারি চাকরির জন্য কোটা সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা এবং অন্যত্র হিংসা ছড়িয়েছে। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এই সংখ্যা ২৫-এ পৌঁছেছে। কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে ৩০ জন নিহত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা ঢাকার রামপুরা এলাকায় রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) অবরোধ করে, এর সামনের দিকটিতে ভাঙচুর করা হয়। বেশ কয়েকটি পার্ক করা গাড়িতে আগুন লাগানো হয় এবং সাংবাদিক সহ কয়েকজন কর্মী ভিতরে আটকে পড়ে।
ঢাকা ও অন্যান্য শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থার প্রতিবাদ শুরু করেছে। সংবাদপত্র ডেইলি স্টার অনুযায়ী, “কমপক্ষে ১৮ জন বিক্ষোভকারী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকার পক্ষের দলের মধ্যে আজকের দেশব্যাপী সংঘর্ষে মানুষ নিহত এবং আড়াই হাজার জনেরও বেশি আহত হয়েছে।"
এর আগে প্রথম আলো পত্রিকা জানিয়েছিল, “১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নয়জনের মৃত্যুর খবর ঢাকা থেকে পাওয়া গেলেও একজন রাজধানীর সাভারে এবং একজন দক্ষিণ-পশ্চিম মাদারীপুর জেলায়।" সময় টেলিভিশন জানিয়েছে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করতে থাকে। রাজধানীর উত্তরা এলাকায় যেখানে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত সেখানে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরা চলা বিক্ষোভ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ থেকে বেড়ে ২৫-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে হতাহতের বিষয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ঢাকা থেকে আসা-যাওয়া রেল পরিষেবার পাশাপাশি রাজধানীর অভ্যন্তরে মেট্রো রেল বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে সরকার মোবাইল ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার সময় বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস করা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষ রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যদের মোতায়েন করেছে। আধাসামরিক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অ্যান্টি ক্রাইম র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরের রাস্তায় টহল দেওয়ার কারণে সরকারি অফিস এবং ব্যাঙ্ক খোলা ছিল কিন্তু সীমিত গণপরিবহনের কারণে উপস্থিতি কম ছিল।
বাংলাদেশে সরকারি চাকরির ৫৬ শতাংশ বর্তমান কোটা পদ্ধতিতে সংরক্ষিত। সর্বাধিক ৩০ শতাংশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্য, ১০ শতাংশ অনগ্রসর প্রশাসনিক জেলাগুলির জন্য, ১০ শতাংশ নারীদের জন্য, ৫ শতাংশ জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জন্য এবং এক শতাংশ শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য।