scorecardresearch
 

Lata Mangeshkar: 'অ্যায় মেরে ওয়াতান', যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যেভাবে উজ্জীবিত করেছিল লতার কণ্ঠ

সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে ভারতের 'নাইটিঙ্গেল' উপাধি দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। কিন্তু তিনি যে উপাধিটি সবচেয়ে বেশি চেয়েছিলেন এবং যা পেতে ব্যর্থ হন তা হল রাজস্থানের দুঙ্গারপুরের রাজকুমারী। ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিখ্যাত ক্রিকেটার এবং ম্যানেজার রাজ সিং দুঙ্গারপুরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সেসময় চর্চায় আসে।

Advertisement
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যেভাবে উজ্জীবিত করেছিল লতার কণ্ঠ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যেভাবে উজ্জীবিত করেছিল লতার কণ্ঠ
হাইলাইটস
  • সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে ভারতের 'নাইটিঙ্গেল' উপাধি দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু
  • প্রজাতন্ত্র দিবসে তাঁর গান নেহেরুর চোখে জল এনে দিয়েছিল
  • ভারত-চিন সংঘর্ষের সময় জওয়ানদের বিনোদন দেওয়ার জন্য যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চল ভ্রমণ করেছিলেন

সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরকে (Lata Mangeshkar) ভারতের 'নাইটিঙ্গেল' উপাধি দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু (Jawaharlal Neheru)। কিন্তু তিনি যে উপাধিটি সবচেয়ে বেশি চেয়েছিলেন এবং যা পেতে ব্যর্থ হন তা হল রাজস্থানের দুঙ্গারপুরের রাজকুমারী। ভারতীয় ক্রিকেট দলের বিখ্যাত ক্রিকেটার এবং ম্যানেজার রাজ সিং দুঙ্গারপুরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সেসময় চর্চায় আসে।

বিকানেরের রাজকুমারী রাজ্যশ্রী,  তিনি ছিলেন দুঙ্গারপুরের বোনের মেয়ে। তাঁর আত্মজীবনী, প্যালেস অফ ক্লাউডস: এ মেমোয়ার, (ব্লুমসবারি ইন্ডিয়া ২০১৮)-এ লিখেছেন লতার ক্রিকেট-পাগল ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের সঙ্গে দুঙ্গারপুরের বন্ধুত্বের মাধ্যমে দু'জনের দেখা হয়েছিল। সম্পর্ক থেকে দুঙ্গারপুর রাজপরিবার এবং অন্যান্য রাজকীয় পরিবারগুলি ভেবেছিল তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

রাজ সিং দুঙ্গারপুর ছিলেন দুঙ্গারপুরের মহারাজার তৃতীয় পুত্র। তাঁর তিন বোনের সকলের রাজকীয় পরিবারে বিয়ে হয়েছিল। প্রত্যাশিত ছিল যে রাজ সিংও তাই করবেন। রাজ্যশ্রীর মতে, তাঁর মা সুশীলা, যিনি বিকানেরের শেষ মহারাজা এবং লোকসভার স্বতন্ত্র সাংসদ ডক্টর কর্নি সিংকে বিয়ে করেছিলেন এবং সুশীলার বোন গুজরাটের একটি রাজকীয় রাজ্য দান্তার মহারানি এই সম্পর্কের বিরোধী ছিলেন। রাজ্যশ্রী লিখেছেন: "লতা মঙ্গেশকরকে বম্বেতে ওল্ড বিকানের হাউসে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং আমি দৃঢ়ভাবে সন্দেহ করি যে তাঁর ভাইকে ছেড়ে দিতে বলা হয়।" 

দু'জনই  প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। একে অপরের প্রতি ভক্তি ছিল। তবে জীবনভর দু'জনেই অবিবাহিত ছিলেন। ২০০৯ সালে তাঁর  মৃত্যুর আগে পর্যন্ত একে অপরের প্রতি অনুগত ছিলেন। রাজ্যশ্রী এই গুজবকে খণ্ডন করেছেন যে গোপনে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। 

আরও পড়ুন, প্রয়াত সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর! শোকের ছায়া দেশজুড়ে
 

প্রজাতন্ত্র দিবসে তাঁর গান নেহেরুর চোখে জল এনে দিয়েছিল

১৯৬৩ সালের ২৬ জানুয়ারি, দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে অংশ নিয়েছিলেন গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। রাষ্ট্রপতি এস রাধাকৃষ্ণান, প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী এবং অনেক বিশিষ্ট অতিথিদের সামনে সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন। দিলীপ কুমারের অনুরোধে ভজন 'আল্লাহ তেরো নাম' দিয়ে শুরু করেন সেদিনের সঙ্গীত শুরু করেছিলেন। তিনি 'অ্যা মেরে ওয়াতান কে লোগ'- এ গেয়েছিলেন সেদিনের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে। তাঁর গান শুনে গলা ধরে এসেছিল জহরলাল নেহেরুর।

Advertisement

দেশের জন্য জনপ্রিয় গান

'কোই গুর্খা কোই মাদ্রাসি', 'সরহাদ পার মারনেওয়ালা', 'হর বীর থা ভারত বাসী', 'জো খুন গিরা পর্বত পার', 'ও খুন থা হিন্দুস্তানি', 'জো শহীদ হুয়ে হ্যায় উনকি, জারা ইয়াদ করো কুরবানি', একের পর এক দেশকে উপহার দিয়েছেন কোকিলকণ্ঠী লতা মঙ্গেশকর।

জানা যায়,পরবর্তীকালে লতাকে চায়ের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নেহেরু। সেই সময়ে নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন তিন ছিল মূর্তি ভবনে। সেদিনই ইন্দিরা গান্ধী এসে তাঁর হাত ধরে বললেন, 'আমি চাই তুমি তোমার দুই ছোট ভক্তের সঙ্গে দেখা কর।' তিনি তাঁকে তাঁর দুই সন্তান রাজীব এবং সঞ্জয় গান্ধীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। 

ভারত-চিন যুদ্ধে তাঁর অবদান

দেশে যখন যুদ্ধের মেঘ ঘিরে ধরেছিল, ভারত-চিন যুদ্ধের সময়, তিনি, সুনীল এবং নার্গিস দত্তের সঙ্গে, ১৯৬২ সালের ভারত-চিন সংঘর্ষের সময় জওয়ানদের বিনোদন দেওয়ার জন্য যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চল ভ্রমণ করেছিলেন। যান যায়, যে জওয়ানরা বাড়ি থেকে দূরে, কোন রেডিও ছাড়াই কঠোর পরিস্থিতিতে বসবাস করছিলেন। সুনীল দত্ত সৈন্যদের মনোবল বাড়ানোর জন্য এলাকায় ভ্রমণের প্রস্তাব করেছিলেন, নেহেরু খুশির সাথে এই ধারণায় সম্মত হন। দত্ত লতা মঙ্গেশকর, কিশোর কুমার এবং ওয়াহিদা রহমানের মতো সহশিল্পীদেরও একই কাজ করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

সাংসদ ছিলেন লতা

লতা মঙ্গেশকর রাজ্যসভায় ছয় বছরের মেয়াদেরও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করতেন গায়ক বিশ্বাস করেছিলেন  এ কাজে তিনি অনুপযুক্ত ছিলেন। লতাকে ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী রাজ্যসভায় মনোনীত করেছিলেন।  লতা মঙ্গেশকর, যিনি ২২ নভেম্বর, ১৯৯৯ থেকে ২১ নভেম্বর, ২০০৫ পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন, ২০০০-২০০১ বছরে ১৭০টি বৈঠকের মধ্যে মাত্র ছয়টিতে অংশ নিয়েছিলেন।

 

Advertisement