একবছর আগে ২০ নভেম্বর সকলকে কাঁদিয়ে চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। গতবছর দিওয়ালির পর পরই আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন ঐন্দ্রিলা। তারপর ফের হাসপাতালে চলে জীবনযুদ্ধের লড়াই। প্রিয়জনদের রাতজাগা, উৎকন্ঠা, ভক্ত-অনুগামীদের প্রার্থনা, কিছুই কাজ করল না। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর সব শেষ। মা শিখা শর্মার আদরের মিষ্টি আর কোনওদিনও ফিরে আসবে না। কঠিন সত্য, তাও মানতে বড় কষ্ট হয়। একটা বছর ঐন্দ্রিলা ছাড়া কাটালেন মা শিখাদেবী। আজও মেয়ের জন্য মন কাঁদে মায়ের। সবকিছপ ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বরেই সাতপাকে বাধা পড়তেন ঐন্দ্রিলা, তাঁর মনের মানুষ সব্যসাচীর সঙ্গে।
ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচী চৌধুরীর সম্পর্কের কথা টলিউডে সকলেই জানতেন। তাঁদের প্রেম রূপকথার গল্পকেও হার মানাবে। ঐন্দ্রিলার দ্বিতীয়বার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দিল্লিতে কেমোর জন্য যাওয়ার সময়ই অভিনেতা সব্যসাচীকে তাঁর পাশে দেখা গিয়েছিল। এরপরই তাঁদের দুজনের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসে। ঐন্দ্রিলার পাশে সবসময়ই থাকতেন সব্যসাচী। সল্টলেকে তাঁর এক ক্যাফেতে প্রায়ই দেখা যেত ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীকে। ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা এক পুরনো সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন চলতি বছরের মার্চ মাসেই ঐন্দ্রিলা ও সব্যসাচীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। পরিবারের কিছু সদস্য ও বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে ঘরোয়াভাবে তাঁদের আইনি বিয়ে দেওয়ার কথাবার্তাও ফাইনাল হয়ে গিয়েছিল।
তবে সামাজিক মতে বিয়ে জানুয়ারিতে হত। যদিও নভেম্বরে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল সব্যসাচীর। ঐন্দ্রিলার মা এও জানান যে সব্যর বাড়ি থেকেও সেটাই চেয়েছিলেন সবাই। কিন্তু ঐন্দ্রিলার ইচ্ছে ছিল যে আরও দুমাস অপেক্ষা করে যাওয়ার। কারণ ততদিনে তাঁর চুলটাও একটু বেড়ে যাবে আর সুন্দর করে সাজতে পারবেন তিনি। কিন্তু ঐন্দ্রিলার বিয়ের স্বপ্ন পূরণের আগেই চিরতরে হারিয়ে গেলেন অভিনেত্রী। তবে ঐন্দ্রিলা না থাকলেও সব্যসাচী রয়েছেন পরিবারের পাশেই। দিওয়ালির সময়ও দেখা গিয়েছে ঐন্দ্রিলার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে অভিনেতাকে। বর্তমানে সাধক রামপ্রসাদ সিরিয়াল নিয়ে ব্যস্ত অভিনেতা। কিন্তু তারই মাঝে তিনি তাঁর প্রয়াত প্রেয়সীর পরিবারকে সময় দেন।
সব্যসাচীকে দেখা গিয়েছিল টেলি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের সময়ও। প্রয়াত ঐন্দ্রিলাকে মরণোত্তর সম্মান দেওয়া হয় আর সেটা নিতে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ঐন্দ্রিলার মা ও বাবা। সেটা ক্যামেরা বন্দি করতে ভোলেননি সব্যসাচী। চোখে জল না থাকলেও মন যে তাঁর কাঁদছে তা অভিনেতাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। ঐন্দ্রিলার এক বছরের মৃত্যুবার্ষিকীতে মা শিখা শর্মা তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে সকলকে এইদিন একটা করে গাছ পোঁতার জন্য অনুরোধ করেছেন। ঐন্দ্রিলার সব স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। তবে তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর প্রিয়জন-ভক্তদের মাঝে সবসময়।