শনিবার রাতে মুম্বইয়ের বান্দ্রা পূর্ব এলাকায় মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী ও এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে হত্যা করে তিন জন। দশেরার দিন ঘটে যাওয়া এই ঘটনা মায়ানগরীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বাবা সিদ্দিকির খুনের পর বলিউড সুপারস্টার সলমন খানের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তা আরও বেড়ে গিয়েছে। বান্দ্রাতে সলমনের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে ইন্ডাস্ট্রির বন্ধু ও চেনা-পরিচিতদের অনুরোধ করা হয়েছে যে তাঁরা যেন অভিনেতার সঙ্গে কিছুদিন দেখা করতে না আসেন।
ইন্ডিয়া টুডে-র পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সলমনের খুব কাছের বন্ধু ছিলেন বাবা সিদ্দিকি। আর তাঁর মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছেন অভিনেতা। বাবা সিদ্দিকি শুধু বন্ধুই ছিলেন না, পরিবারের একজন ছিলেন সলমনের। কিছুদিন আগেই সিদ্দিকি ও তাঁর ছেলে জিশান সলমনের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে এসেছিল, সেই সময় অভিনেতা সুন্দরভাবে তাঁদের আতিথেয়তা করেছিল। সিদ্দিকির মৃত্যুর পর সলমন এনসিপি নেতার বাড়িতেও পৌঁছান। তবে শোনা যাচ্ছে, শনিবার অনেক রাতে লীলাবতী হাসপাতাল থেকে ফেরার পর সলমন ঘুমোতে পারেননি। তিনি অনবরত জিশান ও তাঁর পরিবারের খবর নিয়েছেন। সিদ্দিকির পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ভাই ফোনে সিদ্দিকির অন্তিম সংস্কারের প্রস্তুতি ও ছোট-বড় সমস্ত কিছু নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সলমন কিছুদিনের জন্য ব্যক্তিগত সব দেখা-সাক্ষাৎ স্থগিত করেছেন। সলমনের পরিবারের অন্য সদস্যরাও এই ঘটনায় মর্মাহত।
বাবা সিদ্দিকিকে হত্যার পিছনে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং-ই যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তই নিজেদের বিষ্ণোই গ্যাংয়ের বলে দাবি করেছে। এই শ্যুটারদের একজনের নাম কর্নেল সিং, যিনি হরিয়ানার বাসিন্দা। দ্বিতীয় শ্যুটার ধর্মরাজ কাশ্যপ হলেন উত্তর প্রদেশের। পুলিশ সূত্রে খবর, মাত্র দেড় থেকে দুই মাস আগেই তারা বাবা সিদ্দিকির বাড়ির ‘রেইকি’ করেছিল। শনিবার এনসিপি নেতা সিদ্দিকির ওপর গুলি চালানো হয়। সিদ্দিকি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর ইফতার পার্টির জন্য জনপ্রিয় ছিলেন। বহু এ-লিস্টেড তারকাকে তাঁর বাড়িতে দেখা যেত।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক পোস্টে লরেন্স বিষ্ণোই এই খুনের ঘটনার দায় নিয়েছে। এই পোস্টে বিষ্ণোই গ্যাং-এর দাবি, তারা সলমন খানের সঙ্গে কোনও ঝামেলা চায়নি, বাবা সিদ্দিকির হত্যার কারণ তাঁর সঙ্গে দাউদের যোগাযোগ। যদিও পুলিশ এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই এখনও করেনি। বিষ্ণোই গ্যাং তাদের ফেসবিক পোস্টে বলেছে, সলমন খান আমরা এই যুদ্ধ চাই না। কিন্তু তুমি আমাদের ভাই (লরেন্স বিষ্ণোই)-এর ক্ষতি করেছো। আজকে যখন বাবা সিদ্দিকির প্রশংসা সকলে করছে, সে একটা সময়ে দাউদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সিদ্দিকির মৃত্যুর কারণ তার সঙ্গে দাউদের সম্পর্ক। এছাড়াও এই পোস্টে অনুজ থাপনের নামও রয়েছে, যে সলমনের বাড়ির বাইরে গুলি চালিয়েছিল এবং পুলিশ হেফাজতে তা মৃত্যু হয়। গ্যাংয়ের দাবি অনুজের মৃত্যুর বদলা সিদ্দিকির হত্যা। সিদ্দিকির খুনে মুম্বই পুলিশ ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে এবং মাস্টারমাইন্ডের খোঁজ চলছে।