বিএসএফ-এর এক্রিয়ার নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি। খোদ রাজ্য বিধানসভাতে গত মঙ্গলবার এই নিয়ে তুমুল হইচই হয়। বিএসএফের এক্রিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শাসলদলের বিধায়করা। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক উদয়ণ গুহ অভিযোগ করেন, তল্লাশি চালানোর নামে বিএসএফ মহিলাদের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করে। অসংলগ্নভাবে মহিলাদের শরীর স্পর্শ করা হয় বলে অভিযোগ দিনহাটার বিধায়কের। সেদিন বিএসএফ- এর এক্তিয়ার বৃদ্ধির বিরোধিতায় রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হয়। রাজ্যে বিএসএফ-এর এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছিলেন অভিনেত্রী অপর্ণা সেনও। আর তাই নিয়েই এবার তাঁকে চিঠি দিলেন বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিএসএফের কাজের এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন অপর্ণা সেন। অপর্ণা বলেছিলেনন, “মিলিটারিদের যতটা ক্ষমতা দেওয়া উচিত, তার থেকেও বেশি দেওয়া হচ্ছে।” তবে এখানেই থেমে থাকেননি বর্ষীয়াণ অভিনেত্রী-পরিচালক। তিনি এও জানান যে, “ছিটমহলের বাসিন্দাদের কথা ভাবলেই শিউরে উঠি। এমনিতেই তাঁদের অবস্থা খুব খারাপ। তার ওপর বিএসএফদের ক্ষমতা বাড়ালে তা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।” সেই প্রেক্ষিতে মমতা সরকারকে সীমান্তবাসীদের কথা ভেবে দেখার অনুরাধও জানান তিনি। তাঁরা যেন নিজেদের মতো করে ব্যবসা, চাষ-আবাদ করতে পারেন, সেদিকেও নজর দেওয়ার আর্জি জানান অপর্ণা সেন। কিন্তু সেই মন্তব্য পেশের মাঝেই সীমান্তরক্ষীদের ক্ষেত্রে ধর্ষক, খুনি-র মতো শব্দ প্রয়োগের অভিযোগ ওটে অপর্ণার বিরুদ্ধে। যার জেরে এবার বিপাকে খ্যাতনামা পরিচালক।
বিএসএফ-মন্তব্য প্রসঙ্গে অপর্ণা সেনকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছে এবার গেরুয়া শিবির। ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হবে বলে অভিনেত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী। বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী পৃথ্বীজয় দাশের নামে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএসএফ নিয়ে মন্তব্যের জন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অপর্ণা সেন যদি নিঃশর্ত ক্ষমা না চান, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাস কয়েক আগে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে এবার থেকে বিএসএফ রাজ্যের অভ্যন্তরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটারের বদলে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত নজরদারির করতে পারবে। বিএসএফ সম্পর্কে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই অবিজেপি রাজ্যগুলি মুখ খোলে। এই সিদ্ধান্ত রাজ্য পুলিশ-রাজ্য সরকারের অধিকার খর্ব করছে বলেও অভিযোগ ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কংগ্রেস এমনকি সিপিএম-ও এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। এই প্রসঙ্গেই আজ(এক্তিয়ার বৃদ্ধি সংক্রান্ত) বিরোধিতা-প্রস্তাব পেশ হয় বিধানসভায়। পরে বিজেপির বিরোধিতা সত্ত্বেও তা সহজেই পাশ হয়ে যায়।