বলিউড হোক বা টলিউড তারকাদের আসল বয়স ধরা কিন্তু খুব মুশকিল। কেউ কেউ তো এতটাই ফিট থাকেন যে তাঁদের দেখলে বোঝাই দায় যে তাঁদের বয়স এত হতে পারে। নিজেদের বয়স ধরে রাখেন কোন ম্যাজিক ট্রিকে তা কিন্তু কেউই জানেন না। তবে এর পিছনে রয়েছে তারকাদের কঠিন পরিশ্রম এবং অবশ্যই ফিটনেস ট্রেনারদের অবদান। টলিউডে ফিটনেস ট্রেনাররা কী ভাবে নতুন চেহারা দেন নায়ক নায়িকাদের? জানুন।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়
টলিউডে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের চেহারা রীতিমতো ঈর্ষা জাগায় সকলকে। ৬০ বছর বয়সেও তিনি ফিট। তাঁর নির্মেদ শরীর দেখলে তাঁর বয়স বোঝার জো কারোরই নেই। প্রসেনজিৎ নিয়মিত জিমে যান এবং ট্রেনারের তত্ত্বাবধানেই তিনি কড়া পরিশ্রম করেন। প্রসেনজিৎ-এর ট্রেনার সুশান্ত দত্ত অভিনেতাকে দিয়ে রোজ স্ট্রেচিং, ফ্রি হ্যান্ড, কার্ডিও, ওয়েট ট্রেনিং সবকিছুই করান। এছাড়াও ট্রেনারের নির্দেশেই বুম্বাদা মেনে চলেন হাই প্রোটিন-লো কার্বোহাইড্রেড-লো ফ্যাট ডায়েট।
আবীর চট্টোপাধ্যায়
অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়ের ছিমছাম সুঠাম দেহ সকলকে আকর্ষণ করে। তিনিও নিয়মিত জিমে গিয়ে ঘাম ঝড়ান। তাঁর ফিটনেস ট্রেনার প্রশান্ত দলুই জানান যে তাঁরও নিয়ম করে একেক দিন একেক রকম ফিটনেস ট্রেনিং চলে। স্ট্রেন্থ ট্রেনিং, অ্যাবডমিনাল এক্সারসাইজ তাঁর শরীরের জন্য যেটা উপযুক্ত সেই সব কিছুই হয়। সঙ্গে অবশ্যই মেনে চলেন সঠিক ডায়েট। আবীর সপ্তাহে অন্তত ছয়দিন ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় কাটান জিমে। অভিনেতা সময় পেলেই জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করেন।
নুসরত জাহান
অভিনেত্রী নুসরত জাহানের স্লিম-ট্রিম শরীর সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ঝড় তোলে। নুসরতকে ফিটনেস ফ্রিকার বলা চলে। তবে নুসরতের ফিটনেস ট্রেনার দেব শর্মা নুসরতের পুরো বিষয়টি হ্যান্ডেল করে। তাঁর কথায় নুসরতের যাতে বডি ফ্লেক্সিবিলিটি বজায় থাকে সেই মত এক্সারসাইজ রুটিন সাজান। আবার অ্যাবডোমিনাল এক্সারসাইজও থাকে। এছাড়াও তার শরীর অনুযায়ী বিভিন্ন এক্সারসাইজ থাকে রুটিনে। নুসরতকেও মানতে হয় কড়া ডায়েট এবং সঠিক বিরতিতে খাওয়া-দাওয়া।
মিমি চক্রবর্তী
অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী অবশ্য কোনও ফিটনেস ট্রেনারের আওতায় নেই। তিনি জিমে যেমন যান তেমনি বাড়িতেও নিয়মিত যোগাসন, শরীরচর্চা করে থাকেন। মিমি নিজেও ডায়েটে মেনে খাওয়া দাওয়া করেন। সেই ডায়েটে নেই কোনও জাঙ্ক ফুড।
পাওলি দাম
নায়িকা পাওলি দামও বরাবর কড়া ফিটনেস রুটিনের মধ্যে থাকেন। পাওলির ফিটনেস ট্রেনার অরিজিৎ ঘোষালের তত্ত্বাবধানে চলে তাঁর ওয়ার্কআউট সেশন। বাড়ির খাবারের ওপর জোর দেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কা সরকার
ছেলে সহজ হওয়ার পর অনেকটাই ওজন বেড়ে যায় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকারের। সেই সময় তাঁর ওজন ছিল ৯০ কেজি। এর পর দু' বছরে স্বাভাবিক নিয়মেই ওজন কমে আসে ৭০ কেজিতে। কিন্তু ৭০ থেকে কীভাবে ৫০ কেজিতে পৌঁছলেন প্রিয়াঙ্কা? ফিটনেস ট্রেনার সৌমেন সেন যেভাবে ফিটনেস রুটিন সাজিয়েছেন, সেটা মেনে চলছেন তিনি। বাড়ির খাবার খান। সন্ধের পর কার্বোহাইড্রেড একেবারেই খান না। ছোলা, ডাল বা মাছের মতো প্রোটিনে ভরা তাঁর রোজকার ডায়েট। দু'টো বড় মিলের মাঝে খিদে পেলে ফল খেতে ভালোবাসেন।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
নায়ক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও নিয়মিত যান জিমে। তার ফিটনেস ট্রেনার তন্ময় সরকার। পরমব্রতর স্লিম অ্যান্ড ফিট বডি টাইপ অনুযায়ী তার এক্সারসাইজ রুটিন সাজান তন্ময়। সেই অনুযায়ী সারা সপ্তাহ চলে ট্রেনিং। ফাংশনাল, মোবিলিটি, আইসোলেশন এইরকম ভাবে তার শরীরের জন্য উপযুক্ত নানারকম এক্সারসাইজ চলে।
টোটা রায়চৌধুরী
এদের মতই আরেক ফিট নায়কের কথা বলতেই হচ্ছে তিনি হলেন টোটা রায়চৌধুরী। তার ছিপছিপে মেদহীন গড়ন এবং চেহারার ঔজ্জ্বল্য দেখলেই বোঝা যায় তিনি নিজের শরীর সম্পর্কে কতটা সচেতন। প্রতিদিন অনেকটা সময় কাটান জিমে। এমনকি ছুটির দিনেও কিন্তু শরীরচর্চা থেকে ছুটি নেন না। বাড়িতেই হাঁটা, দৌড়ানো, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা এসব চলতে থাকে। এবং অবশ্যই একেবারে ঘড়ির কাঁটা ধরে খাওয়াদাওয়া। টোটা রায়চৌধুরী অবশ্য কোনও ফিটনেস ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে নেই।
শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়
অভিনেত্রী শ্রাবন্তা চট্টোপাধ্যায় খুবই কড়া শরীরচর্চার মধ্যে থাকেন। জিম ট্রেনার অভিজিতের কড়া শাসনে শ্রাবন্তীর নতুন জীবনমন্ত্র হল ফিটনেস, ফিটনেস আর শুধুই ফিটনেস। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই অভিনেত্রীকে দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চা করতে। ট্রেনার অভিজিৎ-এর কথা মতোই শ্রাবন্তী নানান ধরনের এক্সাসাইজের পাশাপাশি বাড়ির খাবারই শুধু খেয়ে থাকেন। ধীরে ধীরে এখন অভিনেত্রীর চেহারা আগের চেয়ে আরও পাতলা হয়ে গিয়েছে।