গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিধায়ক-অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে আইনি বিয়ে সারেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। রবিবার আচমকা তাঁদের বিয়ের ছবি সামনে আসায় সকলেই বেশ হতবাক ছিলেন। যদিও কাঞ্চন-শ্রীময়ীর বিয়ে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছিল গত বছর থেকে। তবে বাধ সাধছিল কাঞ্চন ও পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভোর্স। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি কাঞ্চন-পিঙ্কির ডিভোর্সের পরই অভিনেতা তড়িঘড়ি বিয়ে সেরে নেন। তবে সোশ্যাল ম্যারেজ হবে ৬ মার্চ। বিয়ের প্ল্যান থেকে হানিমুন সবটাই শ্রীময়ী শেয়ার করলেন bangla.aajtak.in-এর সঙ্গে।
আইনি বিয়েটা কি আগে থেকেই প্ল্যান করে রাখা ছিল?
শ্রীময়ী: আমি জানতাম না এটা, পুরোটাই কাঞ্চন প্ল্যান করেছে। আমার কাছে সারপ্রাইজ ছিল।
১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়েটা সেরে নিলে। এটাকে কি ভ্যালেন্টাইন্স ডে-এর উপহার বলা যায়?
শ্রীময়ী: পুরোটাই বলা যায়, এটা একেবারে লাইফটাইম গিফট।
বিয়ের পর এখন জীবন কতটা বদলে গিয়েছে?
শ্রীময়ী: আমি বুঝতেই পারলাম না যে কখন 'মিস থেকে মিসেস' হয়ে গেলাম। কিন্তু যেহেতু এখন সামাজিক বিয়ের পরিকল্পনা রয়েছে, তাই মিশ্র অনুভূতি কাজ করছে। কারণ প্রচুর আত্মীয়-স্বজন, কাঞ্চনের বাড়ির তরফ থেকে, আমার বাডির তরফ থেকে, তাই কতটা কী করতে পারব জানি না। সবটাই করছি একা হাতে খুবই কম সময়ের মধ্যে। দিদিও আসতে পারছে না, দিদির মেয়ের পরীক্ষা, তাও দিদি ফোনে ফোনেই অনেক সহযোগিতা করছে, সেগুলো নিয়েই একটু টেনশনে আছে, নয়তো আমার সেরকম কোনও অনুভূতি হচ্ছে না। শুধু একটাই আক্ষেপ রয়েছে সেটা হল কাঞ্চনের বাড়িতে যদি ওঁর মা-বাবা থাকতেন, আমার শ্বশুড়-শাশুড়ি থাকতেন তাহলে বিষয়টা আরও জম্পেশ হত। আমি আসলে একান্নবর্তী পরিবারে মানুষ হয়েছি, সেখানে পুরোটাই একা, কাঞ্চনের দাদা-বৌদি সকলেই রয়েছেন, কিন্তু মা-বাবার জায়গাটা তো শ্রেষ্ঠ, সেক্ষেত্রে তাঁরা থাকলে বিষয়টা অন্যরকম হত, সেটা খুব মিস করছি।
৬ মার্চ সামাজিকভাবে বিয়ে, খুবই কম সময় হাতে, কী কী পরিকল্পনা রয়েছে?
শ্রীময়ী: হ্যাঁ, হাতে খুবই কম সময় তাই প্ল্যান সেই অর্থে কিছুই নেই। আংটি বদল করার একটা ইচ্ছে রয়েছে। এবার যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে দেখা যাক। আমরা তো ভ্যেনুটাই সেভাবে খুঁজে পাচ্ছি না।
তাও বিয়ের ভ্যেনু কোথায় করার ইচ্ছে রয়েছে?
শ্রীময়ী: আমার তো ইচ্ছে ছিল উত্তর কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ি বা এইরকম কোনও জায়গা। কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব নয়। আমার ইচ্ছে শহরের কোনও পাঁচতারা হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হল ভাড়া করে সেখানে অনুষ্ঠানটা করার। মধ্য কলকাতা বা পার্কস্ট্রীট চত্ত্বরের কোথাও করার ইচ্ছে রয়েছে। দেখা যাক কী হয়।
ম্যারেজ ও রিসেপশন কি একইদিনে হচ্ছে?
শ্রীময়ী: বিয়ে মানে তো লগ্ন, তিথি এইসব মেনে করতে হয়, সেটা যদি করতে পারি তাহলে তো বিয়ে আর রিসেপশন আলাদা আলাদাই হবে। নয়তো একদিনেই দুটো অনুষ্ঠান করতে হবে।
বিয়ের মেনুতে কী কী থাকবে?
শ্রীময়ী: কাঞ্চন কিছুই বলেনি। শুধু বলেছে যে আমার বিয়েতে ইতালিয়ান-বিদেশি খাবার এইসব থাকবে না। পাতি বাঙালি খাবার থাকবে, যাতে কবজি ডুবিয়ে খেতে পারি। আর মাটন তো তার মধ্যে অবশ্যই থাকছে।
বিয়েতে তোমার লুকস কেমন থাকছে?
শ্রীময়ী: আসলে আমার ডিজাইনার মুম্বই থেকে এখানে আসবেন খুব শীঘ্রই। এরপর উনি যা বলবেন সেই মতোই হবে। যদি বিষয়টা দুদিন হতো তাহলে দুদিনে ভাগ করে নিতাম, তাই যদি একদিনে করতে হয় তাহলে দেখব আমার লুকসে যাতে দুটোরই টাচ থাকে। আর যদি দুদিন করতে হয় তাহলে দুরকম করব।
হানিমুনে কোথায় যাচ্ছ?
শ্রীময়ী: হানিমুনে এখনই কোথাও যাচ্ছি না। পরপর দুটো মেগা সিরিয়ালের কাজ চলছে, যার ফলে কোনও ছুটি নেই, এটাই তারা অনেক সহযোগিতা করে ম্যানেজ করে দিয়েছে। প্রথম শুরু হচ্ছে সিরিয়ালটা আর আমার চরিত্রটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, টেলিকাস্ট ও ব্যাঙ্কিংয়ের চাপ আছে। ইচ্ছে আছে, পুজোর সময় যে ছুটিটা পাই সেটার পর কোথাও চলে যাব। তবে পুজোটা কলকাতায় কাটাব, বাগবাজারে সিঁদুর খেলা আমার মাস্ট।
কোথায় যাওয়ার প্ল্যান রয়েছে?
শ্রীময়ী: আমার পাহাড় ভীষণ পছন্দের জায়গা। বিদেশে তো আমার সেরকম ঘোরা হয় না, তবে কাঞ্চন বহুবার বিদেশে গিয়েছে। তাই কাঞ্চন চায় দেশের মধ্যেই অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে সেখানেই ঘুরবে। এখনও দুজনেই কিছু প্ল্যান করিনি। যেটা হবে দুজনের মিলিত সিদ্ধান্তে। তবে গেলে পাহাড়েই যাব।
বিয়ের পর স্ত্রী হিসাবে শ্রীময়ী কাঞ্চনের কোন কোন বিষয়গুলির দায়িত্ব নিতে চায়?
শ্রীময়ী: কাঞ্চন খুব সময় মেনে চলে কাজের ক্ষেত্রে। তাই আমি চাই কাজের মতো যেন কাঞ্চন তাঁর খাওয়া-দাওয়াও সময়মতো করে। নিজের শরীরের ব্যাপারে একদম সচেতন নয় কাঞ্চন, কিছুদিন আগেই প্রেসার ফল হয়ে ৫০/৮০ হয়ে গিয়েছিল। মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল বাড়িতে। ওকে ডাক্তারের কাছে বলে বলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি চাই কাঞ্চন তাঁর শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহল হোক। খাওয়া-দাওয়াটা ঠিক সময়ে করুক। আর শরীর থেকে যেন একটুখানি ল্যাদটা চলে যায়, ওঁর জীবনে ল্যাদ আর ঘুম। কাঞ্চন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও ঘুমোতে পারে। আমি চাই এগুলো যাতে ওঁর জীবন থেকে চলে যায়।