'হু ইজ কেকে?' এই মন্তব্য করে গত বছর এই সময় রূপঙ্কর বাগচী (Rupankar Bagchi) ছিলেন সংবাদের শিরোনামে। গত ৩১ মে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন সঙ্গীতশিল্পী কেকে (KK) ওরফে কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (Krishnakumar Kunnath)। তাঁর মৃত্যুর পর কেটে গেছে এক বছর। তবুও সঙ্গীতপ্রেমীরা তাঁকে ভোলেননি এখনও। তিনি বেঁচে রয়েছেন সকলের মননে। কেকে-কে নিয়ে মন্তব্য এবং এরপর তাঁর আকস্মিক মৃত্যু অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে রূপঙ্করের জীবন।
এখন কেমন আছেন রূপঙ্কর বাগচী? এক বছর পর কতটা পাল্টেছে তাঁর জীবন? এই সব প্রশ্ন নিয়ে bangla.aajtak.in-র তরফে তাঁকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। সম্ভবত আজকের (৩১ মে) দিনটি এড়িয়ে চলার জন্যই ফোন বন্ধ করে রেখেছেন তিনি। তবে শিল্পীর বর্তমান পরিস্থিতির কিছুটা আন্দাজ পাওয়া যায় তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট বক্স দেখে।
নেতিবাচক মন্তব্য, কটূকথা এবং সর্বপরি ট্রোলিংয়ের শিকার রূপঙ্কর। 'হু ইজ রূপঙ্কর ম্যান'? 'আপনার গান শুনতে চায় না দর্শক এটা বোঝেন না কেন আপনি?' '৩১ তারিখ কেকে-র প্রয়াণ দিবসে তাকে স্মরণ করে একটা গান হোক...', 'রূপঙ্কর কে?' ইত্যাদি কমেন্টে ভরেছে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজ। এক বছর পরও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন নেটিজেনরা।
ঠিক কী ঘটেছিল? গত বছর ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন রূপঙ্কর বাগচী। যদিও পরে তিনি ভিডিওটি ফেসবুক থেকে ডিলিট করে দেন। তবে সেই ভিডিওতে তিনি বলেন, "আজ শো করতে কেকে কলকাতায় এসেছিলেন। ওয়ান অ্যান্ড ওনলি কেকে। এই শো ঘিরে তুমুল উত্তেজনা। তাঁর কনসার্টের কিছু লাইভ ভিডিও দেখছিলাম। তিনি 'ওয়ান্ডারফুল' গায়ক। কিন্তু আমার মনে হল সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রকম ভিডিও আমার রয়েছে। সোমলতা, ইমন, মনোময়, রাঘব, উজ্জ্বয়িনী, ক্যাকটাস, রূপমের রয়েছে। আমি গান শুনে যা বুঝলাম, আমতা কেকে-র থেকে সবাই ভাল গান গাই। কেন আমাদের নিয়ে এত উত্তেজনে বোধ করেন না বলুন তো?"
বাঙালি শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে রূপঙ্কর বলেন, "কেকে -কেকে -কেকে, হু ইজ কেকে? আমরা যে কোনও কে-র থেকে ভাল গাই। আমি যে গায়কদের নাম নিলাম তাঁরা কেকে-র থেকে অনেক ভাল। বোম্বের শিল্পীদের নিয়ে কেন এত উত্তেজনা? ওড়িশা, পঞ্জাব, দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রির থেকে শিখুন। বাঙালি হন ভাই, বোন, মাসি, পিসি, প্রেমিকা, প্রেমিক -বাঙালি হন প্লিজ।" রূপঙ্কর বাগচীর এই পোস্টে সমালোচনার ঝড় ওঠে নেটপাড়ায়।
গত বছর ৩০ ও ৩১ মে, কেকে-র কনসার্ট ঘিরে অনেক আগে থেকে ছিল উত্তেজনা। ৩১ মে রাতে ছন্দপতন হয় বিনোদন জগতে। এদিন কলকাতায় গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার আকস্মিক মৃত্যু হয় কেকে -র। নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠানের পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, মৃত বলে ঘোষণা করা হয় তাঁকে। ভারতীয় চলচ্চিত্রর অন্যতম বহুমুখী গায়ক ছিলেন কেকে। হিন্দি, তামিল, তেলেগু, কন্নড় এবং বাংলা সহ বেশ কয়েকটি ভাষায় গান রেকর্ড করেছেন তিনি। সঙ্গীতশিল্পীর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে আছে সমগ্র সাংস্কৃতিক জগৎ তথা সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যে।