scorecardresearch
 

Baisakhi Banerjee: পুজোয় বৈশাখীকে কী উপহার দিলেন শোভন ? Exclusive বৈশাখী

Baisakhi Banerjee: পুজোর কাউন্টডাউন শুরু। মহালয়ায় পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে শুরু হল মাতৃপক্ষের। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির টান। কুমরোটুলি থেকে মা মণ্ডপে যেতে শুরু করেছেন। আকাশে-বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ।

Advertisement
বৈশাখী-শোভন পুজোর প্ল্যান বৈশাখী-শোভন পুজোর প্ল্যান
হাইলাইটস
  • পুজোয় সকলেরই আলাদা আলাদা প্ল্যান রয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে সেলেব সকলেই এই পুজোতে মেতে উঠবেন। পুজোতে এই বছর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ল্যান কী?

পুজোর কাউন্টডাউন শুরু। মহালয়ায় পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে শুরু হল মাতৃপক্ষের। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের তুলির টান। কুমরোটুলি থেকে মা  মণ্ডপে যেতে শুরু করেছেন। আকাশে-বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। ছাতিমের নেষা ধরানো গন্ধ বলে দিচ্ছে পুজো চলে এসেছে। পুজোয় সকলেরই আলাদা আলাদা প্ল্যান রয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে সেলেব সকলেই এই পুজোতে মেতে উঠবেন। পুজোতে এই বছর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ল্যান কী? কটা শাড়ি পেলেন শোভনের থেকে? bangla.aajtak.in-কে সবই জানালেন বৈশাখী। 

এই বছর পুজোর প্ল্যান কী?

বৈশাখী: পুজো মানেই আমার আর মেয়ের কাছে কলকাতা ছাড়ার কথা ভাবতে পারি না। যদিও শোভন পুজো আসলেই পালাই পালাই করতে থাকে, কিন্তু আমার ও মেয়ের অনুরোধ, অত্যাচার সহ্য করে এখানে থাকতে হয় শোভনকেও। কারণ মহালয়ার দিন থেকে  দশমী পর্যন্ত আমি প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখতে ভালোবাসি, যদি প্যান্ডেলে নাও যাই তাহলে বাড়ির কাছে যে পুজো মণ্ডপের ঢাকের আওয়াজ, সেই ঢাকের আওয়াজেই আমার মনে হয় যে মা এসে গিয়েছেন, চারিদিকে খুব আনন্দ, এই আনন্দের ছোঁয়া ও স্পর্শের মধ্যে আমি থাকতে চাই। তো কলকাতার বাইরে এ বছর যাব না, তাই শোভনের ওপর অত্যাচার অনেক বেশি হবে । তাই ঝড়, বৃষ্টি, প্রলয় যাই আসুক প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়ি। দ্বিতীয়ত হচ্ছে পুজোর সময় দুপুরে বাড়িতে খাওয়া আর বিকেলে বাইরে খাওয়া। তাই এখন থেকেই আমি আর মেয়ে দেখতে শুরু করে দিয়েছি কোন কোন রেস্তোরাঁয় আমাদের মনঃপুত কী হচ্ছে, সেখানেই হানা দেব। তাই পুজোর কটা দিন দেদার খাওয়া-দাওয়া হবে। আর আমার এ বছর ভীষণ আনন্দ হচ্ছে যে মা আমাদের কাছেই আছেন। অন্যান্যবার পুজোর সময় সন্ধ্যাবেলা সাউথ সিটির ফ্ল্যাটে যাই দেখা করে আসি, কিন্তু এই বছর মা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। সব মিলিয়ে পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। দিন গুনছি পুজো আসার। সকলের কেনাকাটাও হয়ে গিয়েছে, সবাইকে তাড়া দিচ্ছি, যাতে মহুলের ড্রেসগুলো তৈরি হয়ে যায়, শোভনের পাঞ্জাবীগুলো রেডি হয়ে যায় যাতে। আমার বাড়িতে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের জন্য জামা-কাপড় কেনা, তাঁদের পরিবারের জন্য কেনাকাটা করা এইসব এখন প্রায় শেষের মুখে। এরপরই হইহই করে পুজো আসবে, পুজো কেটেও যাবে, আবার মন খারাপ। ফের লক্ষ্মীপুজো আসবে, সুতরাং পুজোর আমাদের জীবন থেকে নিষ্কৃতি নেই। 

আরও পড়ুন

Advertisement


পুজোয় কেনাকাটা কী করলে? 

বৈশাখী: আমি খুব এক্সপেরিমেন্টাল নই। পুজোয় আমার সাদা-লাল পাড় শাড়ি থাকেই, এবার আমার এক বান্ধবী বেনারস থেকে সাদা রঙের বেনারসী উপহার দিয়েছে, সেটা খুব সুন্দর, সেটা আমার ইচ্ছা আছে ষষ্ঠীর দিন পরার। অষ্টমীর দিন আমার মেয়ে আমার জন্য একটা শাড়ি পছন্দ করেছে সেই শাড়িটা পরব। এবার একটা নতুন ধরনের শাড়ি উঠেছে, সোনালি ও রূপোলি জড়ির সমাহারের শাড়ি, তো সেটা খুব সুন্দর দেখতে, সেই শাড়ি একদিন পরব। আমি তসর খুব ভালোবাসি, সেই তসরের ওপর মধুবনীর কাজ করা একটা শাড়ি এবার পরার ইচ্ছা আছে। তবে এই বছর শাড়ির পাশাপাশি আমার ব্লাউজে থাকবে নতুনত্ব। যেহেতু আমি পুজোর এক-একটা বেলায় এক এক ধরনের সাজ রাখি, তো একটা বেলায় ব্লাউজে মাতৃমুখ থাকবে। সেটা একটা অভিনবত্ব। শোভনের গরদের প্রত্যেকটা পাঞ্জাবীতে আমি নিজে ডিজাইন দিয়েছি। এ বছর পুজোয় আমি এমব্রয়ডারি নিয়ে খেলেছি সেটা বেশ ভালো লাগছ। এ বছর মেয়েকে আর আমার শাড়ি পরতে দেব না, ওর নিজের স্টক তৈরি হোক। তাই মেয়েকেও শাড়ি কিনে দিয়েছি। সঙ্গে লহেঙ্গা চোলি, ড্রেসও রয়েছে। মায়ের জন্য হাল্কা রঙের শাড়ি কিনেছি। 

শোভন দা পুজোতে কী উপহার দিল?

বৈশাখী: শোভন তো আমায় একটা নতুন জীবন উপহার দিয়েছে, নতুন করে আর কি শাড়ি বাছতে যাব। আমার না পুজোর বাজার হয় না, সারাবছর যেগুলো পাই তার থেকেই সেরা শাড়িগুলো তুলে রাখি, আর সবই তো শোভনের দেওয়া তাই আলাদা করে কোনটা বলব। যেটা নিয়ম করে করি সেটা হল ষষ্ঠী বা অষ্টমীতে মায়ের দেওয়া শাড়ি পরি আর বাকি দিনগুলোতে শোভনের দেওয়া বা প্রিয় বান্ধবীদের দেওয়া শাড়ি পরি। তবে ইচ্ছে রয়েছে মাইসোর থেকে শোভনের পছন্দ করা একটা শাড়ি কিনেছিলাম, সেই শাড়িটা নবমীর দিন পরব। এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় শাড়ি।  


পুজোর চারটে দিন বাড়িতে কী খাওয়া-দাওয়া হবে?

বৈশাখী: ষষ্ঠী এবং অষ্টমীতে নিরামিষ খাওয়া হয়। আর আমি যেহেতু ষষ্ঠীতে নিরামিষ খাই, এটা শোভনদার মহৎ গুণ যে সে আর আমার সামনে বসে আমিষ খেতে চায় না। নিরামিষ খাবার খেতে শোভন কিন্তু ভালোইবাসে। অষ্টমীর দিন তাই খিচুড়ি আর লাবড়া থাকবে। ষষ্ঠীর দিন অবশ্য আমাদের লুচি জাতীয় খাবারই হয়, চালের কোনও পদ হয় না। তাই ষষ্ঠীতে লুচি আলুরদম, ছোলার ডাল হবে। নবমীতে মাটন মাস্ট। সপ্তমীতে আমি চেষ্টা করি চিংড়ি মাছের মালাইকারি বা ইলিশ মাছের কোনও পদ রাঁধতে। আর এই সব পদগুলি আমি নিজের হাতেই রান্না করি।  

কোন কোন পুজো দেখবে?

বৈশাখী: মহুল আবদার করে রেখেছে ডিজনিল্যান্ড কিন্তু যাবই, তাই শ্রীভূমির পুজোটা তো মাস্ট। তার বাইরে চেতলা অগ্রণীটা আমার গতবছর খুব ভালো লেগেছে, এ বছরও যাব। সুরুচি সংঘ যাব, একডালিয়া যাব, তবে আমি ছোট ছোট পুজো দেখতেও ভালো লাগি। শোভনের ধৈর্য যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ শহরের সব পুজো দেখব। এমনও হয়েছে, শেষের দিকে শোভন এমন ধৈর্য্য দেখাতে শুরু করে না দেখি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ভোর ৩-৪টে পর্যন্ত দেখিয়েছে ঠাকুর।

Advertisement

পুজোয় স্ট্রিট ফুড খাওয়া হবে?

বৈশাখী: মহুল যাতে না খায় সেই জন্য মেয়ে হওয়ার পর থেকেই আমি দূরে স্ট্রিট ফুড থেকে। স্ট্রিট ফুড শেষ কবে খেয়েছি মনে পড়ে না, পুজোর সময়ও খাওয়া হয় না। এখনও যে গিয়ে খাব সেই সুযোগ-সুবিধাও নেই। আগে যখন বন্ধুরা মিলে বেরোতাম তখন স্ট্রিট ফুড খেতাম, সেই সময় রোলের গন্ধেই পাগল হয়ে যেতাম। এখনও সেটা হয়, রোলের গন্ধ পেলেই খাওয়ার ইচ্ছে জেগে ওঠে। 

পুজো মানেই প্রেম, আর বৈশাখী দি পুজোতে কোনও প্রেম করেছে?

বৈশাখী: একটা পুজো আমার কাছে খুব স্পেশ্যাল। যে বছরটায় আমি আর শোভন একসঙ্গে থাকা শুরু করি। সেই পুজোটা আমার কাছে খুব বিশেষ। কারণ সেই পুজোতে আমি বুঝেছিলাম যে শোভন তাঁর সবচেয়ে যন্ত্রণাময় মুহূর্তগুলো অথবা আনন্দের মুহূর্তগুলো আমার সঙ্গে শেয়ার করে নিতে চায়। সেই ২০১৭ সালের পুজোটা আমার কাছে খুব স্পেশ্যাল। সেই সময় আমাদের জীবনে অনেক উথাল-পাতাল, অনেক চড়াই-উৎরাই। কিন্তু শোভন আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছিল তখন। সেই সময় ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও শোভন আমায় নিয়ে ঠাকুর দেখিয়েছিল, খাইয়েছিল, সব বায়না মিটিয়েছিল। কিন্তু তখন ওর আর আমার দুজনের জীবনই ভীষণ কঠিন অবস্থায় ছিল, সেই সময় জীবন অতটা গোছানো অবস্থায় ছিল না। আজ যখন সবকিছু গোছানো, কোথাও যেন ওই পুজোর ভালোবাসাটা রয়ে গিয়েছে, সেই ভালোবাসাকেই প্রত্যেক বছর পুজোয় উদযাপন করি।  

   
 

Advertisement