সোমবার শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আচমকাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কবীর সুমনকে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউতে তাঁকে রাখা হয়। এই খবর সামনে আসার পর থেকেই কবীর সুমনের অনুরাগীদের মধ্যে উদ্বিগ্ন বেড়ে চলে। কারণ কিছুদিন আগেই সঙ্গীত জগতে নক্ষত্রপতন হয়েছে। প্রয়াত হন ওস্তাদ রশিদ খানকে। প্রত্যেকেই যখন কবীর সুমনের স্বাস্থ্য নিয়ে ভীষণভাবে চিন্তিত তখনই কবীর সুমন তাঁর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানালেন যে কেউ যেন তাঁকে নিয়ে চিন্তা না করে
সোমবার শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় কবীর সুমনকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লক-এর সিসিইউতে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সুমনের চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়ে যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও স্থিতিশীল। অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে তাঁকে। সোমবার রাতেই কবীর সুমন তাঁর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বলেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। শিগগিরি সেরে উঠব। চিন্তা করবেন না। সুমনের এই পোস্টের নীচে অনেকেই তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।
কবীর সুমনের এক ছাত্রী মণিষা দাশগুপ্ত সোমবার গায়কের হাসপাতালে ভর্তির খবর নিশ্চিত করেন। তিনি তাঁর পোস্টে এও জানান যে কবীর সুমনের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। গানওয়ালার যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক, সকলে কমেন্ট করে এটাই জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা তাঁর রয়েছে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে তা আরও বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। অসুস্থতার কারণে তাঁর পক্ষে দীর্ঘক্ষণ বসে গিটার বাজানোতেও কিছু সমস্যা হয় বলে বলেছিলেন শিল্পী একটা সময়। একটানা বেশিক্ষণ বসে থাকতে সমস্যা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, সুমনের ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাঁর রক্তে শর্করার পরিমাণও অনিয়ন্ত্রিত বলে জানা গিয়েছে। উচ্চরক্তচাপজনিত সমস্যাও রয়েছে তাঁর। এখনও সুমনকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, সোমবার রাতে চিকেন স্যান্ডউইচ খেতে চেয়েছিলেন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই ব্যবস্থাই করে দিয়েছিলেন। হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, আগের তুলনায় পঁচাত্তর বছর বয়সি শিল্পীর শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এখনও তাঁর সঙ্কট কাটেনি।
আগেও একবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কবীর সুমন। তখনও তাঁর শ্বাসকষ্ট ও গলায় ব্যথা হয়েছিল। সেই সময়ও শিল্পীকে মধ্যরাতে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছিল। তবে চিকিৎসা শুরু হওয়ায় জানা গিয়েছে আপাতত স্থিতিশীল রয়েছেন শিল্পী। দিন কয়েক আগে ওস্তাদ রশিদ খানের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছিলেন শিল্পী। আক্ষেপ করে বলেন, এমন গুণমুগ্ধ একজন শিল্পীর চলে যাওয়া সত্যিই ক্ষতি। আমি ওঁর গানের ভক্ত ছিলাম। এত ছোট হয়ে ও চলে গেল, কষ্ট হচ্ছে ভীষণ।’