তিনি একাধারে গায়ক, গীতিকার, কবি আবার অভিনেতা। তাঁর লেখনীতে জাদু আছে, বলেই মনে করেন অনেকে। কথা হচ্ছে স্বানন্দ কিরকিরেকে নিয়ে। 'সাহিত্য আজতক-কলকাতা ২০২৪'-র দ্বিতীয় দিনে মঞ্চে হাজির ছিলেন শিল্পী। গানে- গল্পে এক জমজমাট বিকেল কাটালেন সেখানে উপস্থিত সকলে। এদিন জীবনের নানা অজানা গল্প শেয়ার করলেন স্বানন্দ।
২০০৬ সালে 'লাগে রাহো মুন্না ভাই' ছবির 'বন্দে মে থা দম' এবং ২০০৯ সালে 'থ্রি ইডিয়টস' ছবির 'বেহতি হাওয়া সা থা ও' গানের জন্য দু'বার শ্রেষ্ঠ গীত বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন স্বানন্দ। এছাড়াও ২০১৭ সালে মারাঠি ভাষার 'চুম্বক'-এ অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে আরও একাধিক পুরস্কার।
স্বানন্দ কিরকিরে বলেন, "ইন্ডাস্ট্রিতে গায়ক না, পরিচালক হতে এসেছিলাম। কিন্তু জীবনের গতি অন্য জায়গায় নিয়ে যায় কখনও কখনও। তবে জীবন যেখানে নিয়ে এসেছে সেটাও খারাপ না। তবে আমার সব গান সকলে পছন্দ করে, এটা সত্যি খুব ভাল একটা অনুভূতি দেয়। আমি দুই ধরণের ছবি আমি বানাতে চাই। যার মধ্যে একটি ছোট শহরের প্রেম কাহিনি রয়েছে, আমি নিজেও একটা খুব ছোট শহর থেকে উঠে এসেছি।"
শিল্পী আরও বলেন, "মানুষ রসগোল্লাও খায়, আবার চ্যুইং গামও খায়। সবটাই ঠিক আছে। ইনস্টাগ্রাম রিলসের অনেক গান ভাল লাগে আমার। শুধু সমস্যা হয়, যখন কেউ কোনও খারাপ উদ্দেশ্যে সেটা করে। ছাঁকনিতে খারাপটা সব সময় ছেঁকে ভালটা নিতে হয়। সমালোচনা করতে আমি পছন্দ করি না একদমই। কখনও র্যাপ লেখার প্রস্তাব আসলে, আমি নিজের মতো করে লিখতে পারব। সঙ্গীতের মধ্যকার অনেক জিনিসের লাগাতার বদল হচ্ছে। আমি এই বিতর্কে যেতে চাই না, কোনটা ভাল- কোনটা খারাপ। র্যাপ আমার খুব ভাল লাগে, অনেকের শুনেছি এটা ভাল লাগে না। যখন আমার গান ভাইরাল হয়, দারুণ লাগে। নিজের গানে লোকজন রিলস বানাচ্ছে এত, এটা দেখতে সত্যি ভাল লাগে।"
স্বানন্দ কিরকিরে এদিন শেয়ার করেন, "টয়লেটে গিয়েও গান লিখেছি। একটা ঘরে অনেকজন ছিলাম, ফাঁকা জায়গা নেই। অবশেষে টয়লেটে গিয়ে লিখেছিলাম। এমনকী সিগারেটের বাক্সর পিছনেও গানের কথা লিখেছি। তবে এখন মোবাইলে লিখি। টেকনোলজির অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। সেটাকে আমি আপন করে নিই। সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেক সময় এক- দু লাইন লিখে দিই। তবে আমার রিলস বানানোর কোনও চাপ নেই।"
শিল্পীর কথায়, "ওটিটি-র গান এত ভাল হচ্ছে, কিন্তু সেগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। তবে এবার চেষ্টা করছি ওটিটি-র গানও মেইনস্ট্রিম লেভেলে প্রকাশ্যে আনার। যাতে হারিয়ে না যায়। আশা করি এবার থেকে ওটিটি-তে এত ভাল ভাল গান আসবে।
প্রসঙ্গত, শনি ও রবিবার দু'দিন কলকাতায় চলছে 'সাহিত্য আজতক-কলকাতা ২০২৪'। সাহিত্য থেকে রাজনীতি, আলোচনা, বিতর্কের সবচেয়ে বড় আসর, রীতিমতো সাড়া ফেলেছে তিলোত্তমায়। দু'দিন ধরে দুই মঞ্চে বাংলার সাহিত্য, কবিতা, গান নিয়ে বিস্তারিত চর্চা ও বিতর্ক সভা চলছে। ইন্ডিয়া টুডে গোষ্ঠীর পরিচালিত দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেল 'আজতক', দেশের প্রতিটি বড় শহরেই সাহিত্য চর্চার এই মহামিলনের আসরের আয়োজন করে আসছে অনেক বছর ধরেই। এবারও ফের কলকাতায় আয়োজিত হয়েছে সাহিত্য -সংস্কৃতির এই মিলনক্ষেত্র।