আরজি কর কাণ্ড নিয়ে যখন গোটা বাংলার মেয়েরা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন, সেখানে একপ্রকরভাবে নীরব ছিলেন তৃণমূলের বেশ কিছু তারকা সাংসদ। সেই তালিকায় ছিলেন সায়নী ঘোষ, শতাব্দী রায়, জুন মালিয়া, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এঁদের লাপতা লেডিস অ্যাখা দেওয়া হয়েছিল। তবে ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর আরজি কর কাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন রচনা। আর প্রতিবাদ করতেই ট্রোলের মুখে তৃণমূলের সাংসদ।
বৃহস্পতিবার, স্বাধীনতা দিবসের দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় চোখে জল নিয়ে আরজি করের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন। নেট দুনিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল। যদিও রচনার এই ভিডিও দেখে অনেকেই তাঁর সমালোচনা করতে ছাড়েননি। এবার সেই নিয়ে তৃণমূল সাংসদকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না সঙ্গীতশিল্পী সাহানা বাজপেয়ী। তৃণমূল সাংসদের নাম না করেই তাঁকেই কুম্ভীরাশ্রু বলে কটাক্ষ করলেন শিল্পী। ফেসবুকে সাহানা একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, কুম্ভীরাশ্রু দেখিতে দেখিতে এই প্রশ্নটাই মাথাচাড়া দিতেছে অনেকের মতোই আমার মনে: তা স্মাজ-প্রুফ কাজলটির ব্র্যান্ডটি যদি বলিতেন, খুবই উপকৃত হইতাম।
আসলে রচনা যে সময় ভিডিওটি করেছিলেন, তখন তিনি কাজল পরেছিলেন এবং কান্নাকাটি করার পরও তাঁর চোখে কাজল ঘেঁটে যায়নি। এমনকী বার বার আবেগতাড়িত হয়ে যখন চোখের জল মুছেছেন সেই সময় কাজলের স্থায়িত্বের প্রসঙ্গ টেনেই সাহানা এই পোস্ট করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সাহানা নাম না করেই রচনার দিদি নম্বর ১-এর প্রসঙ্গ টেনে গায়িকা লেখেন, আমাদের আবার নির্লজ্জ নেকুপুসু লুতুপুতু অতি দুর্বল-অভিনয়জাত নাকিকান্না কান্দিতেও হয় না। দুপুর গড়াইতে না গড়াইতে এমনিই ঘামে লেপটিয়া যায় । টিভিতে প্রাত্যহিক সান্ধ্যকালীন সুড়সুড়ি দিতে না হইলেও আমাদেরও ‘মেকআপের বুকিং’ দিয়ে ‘রাতের পথনাটিকা’য় শামিল হইতে হয় ‘সেলফিখোর নেশাড়ুদের’ ন্যায়।
গোটা পোস্টে একবার রচনার নামের উল্লেখ নেই ঠিকই, কিন্তু কারুর বুঝতে অসুবিধা হয়নি সাহানার নিশানায় কে। কমেন্ট বক্সেও উপচে পড়ছে হাসির রোল। প্রসঙ্গত, ১৫ অগাস্ট রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে বলেন যে তিনি মহিলাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচিকে সমর্থন করেন। এদিন রচনা বলেন, 'আমি একজনের মা, একজনের মেয়ে। আজকে ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবস। দেশ আমাদের স্বাধীন হয়েছে। আমরা কতটা স্বাধীন হয়েছি বলতে পারেন? সত্যিই কি আমরা স্বাধীন হয়েছি? সারা ভারতবর্ষের মহিলারা কি আজ স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারছেন? দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মণিপুর, একটার পর একটা ঘটনা। আমরা মেয়েরা কবে স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারব? এটা সবথেকে বড় প্রশ্ন। এই আরজি করের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, মুখে আনা যায় না যা ঘটেছে। আমরা প্রতিবাদের সুর তুলেছি। আমরা আওয়াজ তুলেছি, আমরা রাস্তায় হাঁটছি। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। এরকম একসঙ্গে মহিলাদের আওয়াজ এর আগে আমার মনে হয় না ভারতবর্ষে কখনও উঠেছে। আমি আপনাদের স্যালুট জানাচ্ছি।'