গত বছর ২১-এর সভামঞ্চে সকলের নজর কেড়েছিলেন এক তরুণী। তাঁর ঝাঁঝালো বক্তৃতা শোরগোল ফেলেছিল বিরোধী শিবিরেও। তিনি হলেন রাজন্যা হালদার। বাংলার শাসকদলের ছাত্র সংগঠনে উল্কা গতিতে উত্থান রাজন্যার। তাঁর কাঁধে এই মুহূর্তে একাধিক সাংগঠনিক দায়িত্ব। তবে এইসবকে এখন সাইডে রেখে সিনেমায় ডেবিউ করতে চলেছেন তৃণমূলের এই যুবনেত্রী। বছরের প্রথম দিনই তাঁর ছবির পোস্টার সামনে এসেছে। আর তারপরই শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। ছবির নাম '১৯৪৫ : বিহাইন্ড দ্য মাউন্টেনস'। যার পরিচালক প্রান্তিক চক্রবর্তী রাজন্যার হবু বর। এই সিনেমায় রাজন্যাকে দেখা যাবে দার্জিলিংয়ের স্বাধীনতা সংগ্রামী পুতলি তামাংয়ের ভূমিকায়। জীবনে প্রথমবার রাজনীতিতে প্রবেশ করা নিয়ে যেমন উচ্ছ্বসিত ছিলেন রাজন্যা ঠিক একই রকম খুশি দেখা গেল সিনেমায় ডেবিউ করার ক্ষেত্রেও। রাজন্যার পাশাপাশি এই ছবিতে অভিনয় করেছেন ঋতব্রত ভট্টাচার্য, রিয়া ভুজেল, মণিকুমার ভুজেলরা। নিজের বিগ স্ক্রিন ডেবিউ নিয়ে উত্তেজিত রাজন্যা। মাস কয়েক আগেই ছবির পরিচালক প্রান্তিক চক্রবর্তীর সঙ্গে এনগেজমেন্ট সেরেছেন রাজন্যা। bangla.aajtak.in-এর সঙ্গে কথা বলে জাহির করলেন তিনি কতটা উচ্ছ্বাসিত তাঁর প্রথম সিনেমা নিয়ে।
রাজনীতি ছেড়ে সিনেমা?
রাজন্যা: রাজনীতির সঙ্গে সিনেমা করছি। রাজনীতির রাজন্যা তো অবশ্যই রাজনীতির ময়দানে রয়েছে, কিন্তু আমরা জানি যে সিনেমা মানে হল গ্রেটেস্ট ফর্ম অফ আর্ট। শিল্পী রাজন্যা তো আগেও ছিল, এখনও আছে আর পরেও থাকবে। সেই শিল্পী সমন্বয়কে নিয়েই রাজন্যার সিনেমায় আসা।
পরিচালক তো হবু বর সেই কারণেই কি সিনেমায় আসার সিদ্ধান্ত?
রাজন্যা: সেই সুবিধা তো আছেই। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে আমার চরিত্র ও এই ছবির চিত্রনাট্য। যা অসাধারণ আর দর্শককে এই ছবি অবশ্যই দেখতে হবে।
তোমার চরিত্রটা এবং এই সিনেমাটা নিয়ে যদি কিছু বল
রাজন্যা: আমি পাহাড়ের স্বাধীনতা সংগ্রামীর ভূমিকায় অভিনয় করছি। আমাদের বাংলার দার্জিলিংয়ের স্বাধীনতা সংগ্রামী পুতলি তামাং, যিনি ইতিহাসে বিস্তৃতির পাতায় হারিয়ে গিয়েছেন, কারণ পুতলি তামাংই প্রথম যিনি পাহাড়ের সঙ্গে গান্ধীজিকে প্রথম পরিচয় করিয়ে ছিলেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় পাহাড়ে এই পুতলি তামাংই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বাস্তব জীবনের মতোই আমি সিনেমায় নেত্রী চরিত্রে আছি, আমার রিল লাইফ ও রিয়্যাল লাইফ এখানেই মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। আমি রিয়্যাল লাইফেও সব সময় রণং দেহি মূর্তি ধারণ করে থাকি আর রিল লাইফেও আমি একই অবতারে দর্শকদের কাছে ধরা দেব। তবে এই সিনেমায় আমি শুধু একটি চরিত্রে রয়েছি, ব্রিটিশদের ভারত থেকে তাড়াতে কীভাবে দার্লিজিং-সহ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাহাড়ের মানুষ, সেই আখ্যানই লেন্সবন্দি হয়েছে এই ছবিতে।
কবে মুক্তি পাচ্ছে তোমার ডেবিউ ছবি?
রাজন্যা: এই ছবি অক্টোবরে শ্যুটিং হয়ে গিয়েছে, ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন মুক্তি পাবে।
রাজনীতি নাকি সিনেমার ফ্লোরে শ্য়ুটিং, কোনটা বেশি কঠিন?
রাজন্যা: রাজনীতি আর শ্যুটিং দুটোই খুব কঠিন। দুটোতেই অনেক পড়াশোনা করতে হয় আর দুটোতেই অনেক খাটনি আছে। দুটোর ক্ষেত্রেই খেটে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। ছোটবেলা থেকে গান-নাচের মধ্যে থাকলেও শ্যুটিং করতে গিয়ে দেখেছি এটা বেশ কঠিন কাজ।
পরবর্তী কালে রাজন্যা কি অভিনয় করতে চায়?
রাজন্যা: এটা তো সময় বলবে। সিনেমা ও রাজনীতিতে একটা কমন ফ্যাক্টর হল মানুষ শেষ কথা বলে। মানুষের পছন্দ-অপছন্দটা প্রাধান্য পায়। আমি পরবর্তীতে সিনেমা করব কি করব না সেটা মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে।