টলিপাড়ায় জিৎ তাঁর ক্যারিশ্মার জোরে ইন্ডাস্ট্রিতে পাকাপাকি জায়গা বানিয়ে ফেলেছেন। বাঙালি নন, আদপে অবাঙালি জিৎ ঝরঝরে বাংলা বলে শহর থেকে গ্রাম, নিজের ভক্তের সংখ্যা বাড়িয়েই চলেছেন। বহুদিন হল বাংলার বাণিজ্যিক ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করছেন জিৎ। তাঁকে এই নামেই চেনেন দর্শকরা। তবে তাঁর যে একটা পদবীও আছে, তা হয়ত অনেকেই জানেন না।
জিৎ-এর পদবী হল ‘মদনানী’। কেউ কেউ হয়ত এই পদবী শুনে থাকবেন। তবে নাহ জিৎ অভিনেতা হওয়ার পর বাবার পদবী ব্যবহার করেন না। কিন্তু কেন? এমনকি জিৎ-এর আসল নামও জিৎ নয়। এই বছর সাহিত্য আজতকের মঞ্চে এসে জিৎ জানিয়েছেন সেই কথা। তিনি বলেন, ‘আমি মানুষের মন জয় করতে চাই, তাই আমার নাম শুধুই জিৎ। স্কুলের খাতায় আমার নাম অবশ্য ছিল জিতেন্দ্র মদনানি। বাড়িতে সকলেই জিতু জিতু বলে ডাকত। তবে যখন সিনেমা করতে আসি তখন আমার নাম হয়ে যায় জিৎ। আসলে জিৎ মানে জয় করা। আমি মানুষের মন জয় করতে চেয়েছিলাম।
জিৎ এর জন্ম আসলে সিন্ধি পরিবারে। ২০১১ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি এক স্কুলশিক্ষক মোহনা রতলানীকে বিয়ে করেন। ২০১২ সালে ১২ই ডিসেম্বর তাঁদের প্রথম সন্তান, মেয়ে নবন্যার জন্ম হয়। সম্প্রতি পুত্র সন্তানেরও বাবা হয়েছেন জিৎ-মোহনা। দুই সন্তান নিয়ে সুখের সংসার তাঁদের। জিৎ-এর বাবা-মাও তাঁর সঙ্গেই থাকেন। তবে অবাঙালি হলেও জিৎ-এর পড়াশোনা সেন্ট জোসেফ অ্যান্ড মেরি স্কুলে, পরে নিউ আলিপুর এবং হাজরার ন্যাশনাল হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হন। পরে তিনি তাঁর পরিবারিক ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন। যদিও সৃজনশীল কাজের প্রতি তাঁর বরাবরই উৎসাহ ছিল। তিনি নাকি মাঝেমধ্যে তিনি বিখ্যাত অভিনেতাদের অভিনয় অনুকরন করার চেষ্টা করতেন। আর সেকারণেই তাঁর এক বন্ধু রাজেশ চৌধুরী সৃজনশীল দুনিয়ায় জিৎতেন্দ্র(তৎকালীন নাম)কে নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে বলেন। সেই কথাতেই অভিনয় দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন জিতেন্দ্র। এরপর থেকে তাঁর নাম হয় জিৎ।
এরপর ১৯৯৮ সালে জিৎ-এর প্রথম সিরিয়াল ছিল ‘বিষবৃক্ষ’। তারাচরণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। জননী-তে দেখা গিয়েছিল অনিলের চরিত্রে। এরপর আরও কিছু সিরিয়ালে অভিনয় করেন তিনি।পরে তিনি মুম্বই যান, সেখানে ছিলেন পাঁচবছর। পরে ২০০১ সালে তেলুগু ছবি ‘চাঁদ’-এ অভিনয় করেন। তারপর ২০০২ সালে প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদীর বিপরীতে জিৎ-এর প্রথম বাংলা ছবি ছিল ‘সাথী’। যে ছবিটি ছিল ব্লকবাস্টার। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি জিৎকে।