উত্তম কুমার মানেই বাঙালির কাছে একটা আবেগের জায়গা। আজও তিনি সকলের কাছে প্রিয় মহানায়ক। উত্তম কুমার বাঙালির খুবই কাছের এক নায়ক। তিনিই বাঙালির একমাত্র ম্যাটিনি আইডল। আজও তাঁর ব্যাপারে জানতে আগ্রহী থাকেন দর্শকেরা। পর্দায় উত্তম কুমার মানেই আলাদা এক ম্যাজিক তৈরি হবে। আর সেই যাদুতে আজও মজে আট থেকে আশি সবাই। খাদ্য রসিক বলেই পরিচিত ছিলেন মহানায়ক। আর অন্যান্য বাঙালিদের মতো তিনিও মিষ্টি খেতে খুব ভালবাসতেন। যদিও উত্তম কুমার হওয়ার পর সেটা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে মহানায়কের মিষ্টি খাওয়ার এক অদ্ভুত নিয়ম ছিল।
উত্তম কুমারের এই খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে সন্ধান দিয়েছিলেন সুপ্রিয়া দেবীর চার দশকের পুরনো মেকঅ্যাপ ম্যান কিশোর দাস। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে কিশোর দাস বলেন, খাবার টেবিলে যাবতীয় খাবার সাজিয়ে রাখতেন দিদি (সুপ্রিয়া দেবী), মুরগির মাংস, মাছ, মিষ্টি থেকে ফল ৷ দাদা ভাবতেন, তাঁকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে ৷ তাই সবসময়ই দিদি বলতেন, বলো কোনটা দিয়ে শুরু করবে? কিন্তু শব্দ খুঁজে পেতেন না দাদা। তিনি আরও জানান যে প্রতিটি রান্নাই চেখে দেখতেন উত্তম কুমার। তবে পরিমাণে খুব কম। আর খাবার শেষে রসগোল্লা খেতেন। তবে তাতে নুন মাখিয়ে। তার কারণ হিসাবে জানা গিয়েছে যে উত্তম কুমার সরাসরি মিষ্টি খাওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না। তাই নুন মাখিয়ে মিষ্টি খেতেন।
মহানায়ক রোজ সকালে উঠে তেতো খেতেন। একটা সময় কব্জি ডুবিয়ে মাংস খেতে পারতেন। পারতেন একসঙ্গে চল্লিশটা রসগোল্লাও খেয়ে ফেলতে। পরে ব্র্যান্ড ‘উত্তমকুমার’ হওয়ার পরে সব ছেড়ে দিয়েছিলেন। কাছের লোকদের উপদেশ দিতেন, মাংস খাবি। মিষ্টি বেশী খাবি না, ভুঁড়ি হবে।
উত্তম কুমারকে অনুসরণ করতে গিয়ে নাকি সুপ্রিয়া দেবীও নুন আর লেবুর রস মাখিয়ে রসগোল্লা খেতে শুরু করেন আর দারুণ নাকি সেটা খেতে লাগত বলে সুপ্রিয়া দেবী জানিয়েছিলেন কিশোর দাসকে। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে আজও উত্তম কুমার সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ আনন্দ আশ্রম, সপ্তপদী, মৌচাক, সন্ন্যাসী রাজা, নায়ক, হারানো সুর, পথে হলো দেরী, সাড়ে চুয়াত্তর, ইন্দ্রাণী, একটি রাত, ওগো বধূ সুন্দরী, ছদ্মবেশী, দেয়া নেয়া, শঙ্খবেলা, সুনয়নী, দুই পৃথিবী, মরুতীর্থ হিংলাজ -সহ অসংখ্য ছবিতে দর্শকের মনে বিরাজ করেছেন তিনি ৷ আজ সেই মহানায়কের জন্মদিন৷