জন্মদিনের দিনই মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করলেন অভিনেত্রী তথা তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। মায়ের মৃত্যুর ১৩ দিনের শ্রাদ্ধের কাজ করলেন অভিনেত্রী। গত ১৫ জানুয়ারি পৌষ সংক্রান্তির মাকে হারিয়েছেন তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। মাকে হারিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। আর মায়ের পারলৌকিক কাজের দিনই সায়নীর জন্মদিন। তাই এইদিন বেশি করে মনে পড়ছে তাঁর মাকে।
সায়নী সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটি ছবি পোস্ট করেছেন। একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, সায়নী সাদা রঙের পোশাক পরে আছেন। সামনেই মায়ের ছবি, তা মালা দিয়ে সাজানো। শ্রাদ্ধের সমস্ত উপকরণ সামনে রাখা রয়েছে। পুরোহিত সেই কাজ সারছেন। অপর ছবিতে মায়ের ছবির সামনে হাতজোড় করে আশীর্বাদ নিতে দেখা গেল অভিনেত্রীকে। এই ছবি পোস্ট করে অভিনেত্রী জানিয়েছেন যে আজই তাঁর জন্মদিন। ৩২ বছরে পা দিলেন তিনি। আর আজকের দিনে তিনি তাঁর মাকে ব্রহ্মলোকের আলোকপথে এগিয়ে দিলেন।
ক্যাপশনে সায়নী লিখেছেন, মা, আজ থেকে বত্রিশ বছর আগে ঠিক এই দিনে তুমি আমাকে ভূলোকের আলো দেখিয়েছিলে, বত্রিশ বছর পর আজ ঠিক একই দিনে তোমাকে আমি ব্রহ্মলোকের আলোকপথে এগিয়ে দিলাম। তোমার আসীম জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা, সকল জীবের প্রতি পরম স্নেহ, পরোপকারি মন, সরল স্বভাব, অতি সাধারন জীবনযাপন, পরিবার পরিজনের প্রতি দায়িত্ববোধ, নিরলস কর্ম ও সংসার সাধনা, অপরিসীম সহ্যশক্তি, প্রাণ খুলে হাসার ক্ষমতা, আনন্দে থাকা ও আনন্দে রাখার ক্ষমতা আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছে বার বার॥ বছরের পর বছর শত মানসিক ও শারীরিক কষ্টকে উপেক্ষা করে হাসি মুখে লড়াই করে চলা, সত্যি এক সাধারণ মেয়ের অসাধারণ মা তুমি। এরপর সায়নী লিখেছেন যে তাঁর মা যেন ঈশ্বরের পায়ে ঠাঁই পান। মায়ের সব শক্তি সায়না নিজের মধ্যে ধারণ করলেন বলেও জানিয়েছেন। মায়ের সব অপূর্ণ স্বপ্ন মেয়ে হিসাবে পূরণ করার প্রতিজ্ঞা নে তৃণমূলের সভানেত্রী। সবশেষে সায়নী লেখেন, শুভ যাত্রা মা, শুভ জন্মদিন মিস ঘোষ।
সায়নীর এই পোস্টে তাঁকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি নেটিজেনরা তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন সায়নীর মা সুদীপা ঘোষ। হাসপাতালে ভর্তি করানোও হয়েছিল। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ১৫ জানুয়ারি প্রয়াত হন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, শ্বাসনালীতে সংক্রমণ হয়েছিল অভিনেত্রীর মায়ের।
মায়ের অসুস্থতা নিয়ে প্রকাশ্যে সে ভাবে কখনওই কথা বলতে শোনা যায়নি সায়নীকে। গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় শুধু একবার দলের হয়ে প্রচারের কর্মসূচি বাতিল করার কারণ হিসাবে জানিয়েছিলেন মায়ের অসুস্থতার কথা। সেটা ছিল জুলাই মাস। তারপর ৬ মাস কেটে গিয়েছে। সায়নীকে বহু সভাতেও দেখা গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি কোনও কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন না। হয়ত মাকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।