একে তো শহরজুড়ে চলছে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ। তারওপর টলিউডের যৌন হয়রানির ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা ইন্ডাস্ট্রিতে। যৌন হেনস্থার অভিযোগে শুক্রবারই ডিরেক্টর্স গিল্ডের পক্ষ থেকে পরিচালক অরিন্দম শীলকে সাসপেন্ড করা হয়। আর এই নিয়েই এখন তোলপাড় টলিপাড়া। টিনসেল টাউনের একাংশ মুখ খুলেছেন অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে। সম্পর্কে পরিচালকের তুতো বোন হন দেবলীনা দত্ত। দাদার এই ধরনের কীর্তি সামনে আসার পর দেবলীনার কাছে অরিন্দম শীল দাদা হিসাবে সম্মান হারিয়েছেন।
এক সংবাদমাধ্যমের কাছে অরিন্দম প্রসঙ্গে বলতে দিয়ে দেবলীনা বলেন, 'সহকর্মীদের থেকে অরিন্দমদার নামে বহু অভিযোগ শুনেছি। গত বেশ কয়েক বছর ধরেই এগুলো কানে আসছে। কিছু অভিযোগের কথা আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, সেগুলো সামনে আসেনি। কিন্তু আমি এগুলো নিয়ে এতদিন কিচ্ছু বলিনি। আসলে মানুষটা তো আমার সম্পর্কে দাদা। আমার কাছে সম্মানের ব্যক্তি। কিন্তু তিনি সেই সম্মান হারিয়েছেন।' রাগের চেয়েও বেশি দুঃখ হচ্ছে বলে জানান দেবলীনা। তিনি এও বলেন যে তিনি ও তাঁর মা দুজনেই এই ঘটনায় খুবই আহত। দেবলীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন, 'সময় সব বলে দেয়। সময়কে কখনওই চুপ করিয়ে রাখা যায় না।'
এরপরই দেবলীনা নিজের সঙ্গে ঘটা এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। অভিনেত্রী বলেন, 'বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একদল মানুষ নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন। বাংলার এক অভিনেতাও গিয়েছিলেন, যিনি জাতীয় স্তরেও বেশ বিখ্যাত। বাংলা ও হিন্দি দুই ক্ষেত্রেই তিনি বড় তারকা। আমার সঙ্গে মা-ও গিয়েছিলেন। এরপর সংবাদমাধ্যমকে দেবলীনা বলেন, হোটেলে একদিন সেই তারকার ঘরে বসে আমরা সকলে মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ভুসবশত আমার মা গায়ের শালটা ওঁর ঘরে ফেলে আসেন। সে দিন নৈশভোজের সময় সেই তারকা আমার রুম নম্বরটা জেনে নেন। আমি এক প্রথম সারির অভিনেত্রীর সঙ্গে একটা ঘর ভাগ করে নিয়েছিলাম। রাত ঠিক ১২টা বাজে, তখন আমাকে ফোন করেন সেই তারকা।'
দেবলীনা এরপর বলেন যে তিনি তাঁর ঘর থেকে শালটা নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। অভিনেত্রী বলেন, 'আমি তখন খুবই ছোট। এই ডেকে পাঠানোর ইঙ্গিতটা বুঝে উঠতে পারিনি। আর একরকম না বুঝেই সেই তারকার ঘরে যাই। তিনি বলেন, সোফায় রাখা রয়েছে শাল। আমি শালটা আনতে গেলেই তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন এবং মদ্যপ অবস্থায় আমার সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন। আমি দৌড়ে এসে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করতে থাকি। এরপর অভিনেত্রী বলেন, তখন সেই তারকা নিজে থেকেই আমায় প্রশ্ন করেন তুই কি চলে যেতে চাস? দেবলীনার সম্মতি নেই দেখে তিনি অভিনেত্রীকে চলে যেতে দেন। কিন্তু কেন দেবলীনা তাঁর নাম প্রকাশ্যে আনতে চান না? এই নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, এই একটি কারণেই আমি ওই লোকটির পরিচয় প্রকাশ্যে আনতে চাই না।'
এরপরেও দেবলীনার সঙ্গে সেই তারকার একাধিকবার দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে এবং প্রতিবারই খুব সম্মানের সঙ্গেই তিনি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। দেবলীনার কথায়, সাধারণত বড় মাপের অভিনেতারা প্রত্যাখান গ্রহণ করতে পারেন না। কিন্তু সেই তারকার মধ্যে সেটা ছিল না। আর পরেও তিনি দেবলীনার সঙ্গে কোনও খারাপ আচরণ করেননি।