রাজ্যজুড়ে স্কুল পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা গায়েবের পিছনে রয়েছে একটি আন্তঃরাজ্য চক্র। রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে সক্রিয় চক্র রয়েছে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার। তিনি জানিয়েছেন যে পুলিশ ইতিমধ্যেই এই কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য যৌথ তদন্ত দল গঠন করেছে। ইতিমধ্যেই ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুপ্রতিম সরকার আরও জানিয়েছেন যে রাজ্যজুড়ে মোট ১৯১১ জন পড়ুয়ার ট্যাব কেনার টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ একটি যৌথ তদন্ত দল গঠন করেছে। এডিজি সাইবার, ডিআইজি সাইবার এবং অন্যান্য পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনাররা এই দলে রয়েছেন, যেখানে যেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। মোট ৯৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছেন যে ধৃত ১১ জনের থেকে অনেক কিছু জানা গিয়েছে। ১৬ লক্ষ পড়ুয়ার মধ্যে ১৯১১ জন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটাও জানা গিয়েছে যে এই ধরনের DBT সাইবার জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত একটি আন্তঃরাজ্য সম্পর্ক রয়েছে। এই চক্রটি মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড এবং রাজস্থানে কাজ করে এবং এর আগেও কেউ কেউ এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি ইতিমধ্যেই সেটা নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, উত্তরবঙ্গে থেকে ফেরার আগে ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পথে তিনি জানান যারা টাকা পাননি তাঁদের দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মমতার বার্তা, এটা প্রশাসনের কাজ। সাংবাদ মাধ্যমের সালিশির (মিডিয়া ট্রায়াল) ব্যাপার নয়। পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা ঢুকেছে অন্য অ্যাকাউন্টে। বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে এই অভিযোগ। সেই সব অভিযোগের তদন্তের জন্য এবার বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করেছে লালবাজার। ওই দলে রয়েছেন ১০ জন সদস্য। শুধু জেলা নয়, কলকাতার বিভিন্ন থানাতেও দায়ের হয়েছে ১০টি অভিযোগ। এনিয়ে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিয়ে বলে মনে করিয়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, 'মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানেও হাইজ্যাক করেছে। এই দলটাকে আমরাই ধরতে পেরেছি। আমাদের প্রশাসন খুব স্ট্রং, রাফ অ্যান্ড টাফ। ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। বাদ বাকি যা করার করবে। ট্যাবের টাকা যারা পাননি, তাঁদের দিয়ে দেওয়া হবে'।
ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনোর সুবিধার্থে একাদশ ও দ্বাদশ পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের আওতায় ট্যাব কেনার জন্য মেলে এককালীন ১০ হাজার টাকা। সেই টাকাই গায়েব হয়ে গিয়েছে! বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। জেলায় জেলায় উঠেছে ভুরি ভুরি অভিযোগ।