বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপি (BJP) নেতা কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠছে শহর কলকাতা (Kolkata) সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। এবার কলকাতার বুকে ফের একবার সেই ধরনের অভিযোগ। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা এবং ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক বিজেপি কর্মীর দোকানে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে গড়ফা থানা এলাকার হালতু স্কুল রোডে। দোকান মালিক অমিত দাসকে দিনেদুপুরে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো এবং দোকানে লুটপাটের চেষ্টা করা হয় বল অভিযোগ। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গড়ফা থানার পুলিশ।
অভিযোগকারী অমিত দাস জানাচ্ছেন, সোমবার (Monday) দুপুরে দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। সেইসময় হঠাৎই পেশায় জমি-বাড়ির দালাল প্রদীপ ঘোষ নামে এক ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হয়ে বচসা শুরু করে। কিছুক্ষণ উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হতেই ওই ব্যক্তি ফোন করে আরও কয়েকজনকে ডেকে আনে। তারা সেখানে গিয়ে প্রথমে তাঁর সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে।
আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ
অভিযোগকারী অমিত দাসে দাবি, সেই সময় দুষ্কৃতীদের মধ্যে একজনের কোমরে পিস্তল জাতীয় একটা আগ্নেয়াস্ত্র ছিল, যা দেখিয়ে তাঁকে ভয় দেখানো হয়। অভিযোগ, এরপরই দুষ্কৃতী দলের অপর একজন তাঁর কাছ থেকে লকারের চাবি চাইতে থাকে। অমিত দাস বলেন, "ওই ব্যক্তিরা আমাকে বলে তোর লকারের চাবি দে। সেই সময় আমার দোকানের লকারে ১৫ থেকে ১৭ লক্ষ টাকার সোমার গয়না ছিল। আমি ভীষণ ভয় পেয়ে যাই। আত্মরক্ষার্থে ও আমার দোকান রক্ষা করার জন্য আমি চিৎকার করতে থাকি, সেই সময় প্রদীপ ঘোষ ও তার সঙ্গে আসা অচেনা ব্যক্তিরা জামা তুলে আগ্নেয়াস্ত্র দেখায়। আমাকে বলে, মেশিন কোনদিন দেখেছিস? এটাকে মেশিন বলে, ভালো মুখে চাবিটা দে। আমি আরও জোরে চেঁচাতে থাকি, তখন ওরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে আমার বুকে, পেটে, চোখের নিচে এবং মাথার পেছনে বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করে"। এরপর দোকানের ওপরে সিসি ক্যামেরার দিকে নজর পড়তেই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
এফআইআর নেয়নি পুলিশ, দাবি অভিযোগকারীরা
ঘটনার পরই গড়ফা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অমিত দাস। তাঁর আরও অভিযোগ, ঘটনার বিবরণ জানানোর পরেও কোনওরকম এফআইআর না করে শুধুমাত্র একটি জেনারেল ডায়েরি লিপিবদ্ধ করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এমনকী তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর সোমবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে নিজের চিকিৎসা করান অভিযোগকারী। অমিত দাসের দাবি, বিরোধী দল করার জন্য তাঁকে দীর্ঘ দিন ধরেই টার্গেট করা হচ্ছিল। সেই মতোই এদিন হামলা চালান হয়। লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও এখনও পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি বলেই অভিযোগ অমিতবাবুর। এদিকে হামলাকারীরা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়ানোয় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানাচ্ছেন অমিত দাস।
এই বিষয়ে অভিযোগকারীরার আইনজীবী শুভদীপ রায় প্রশ্ন তোলেন, তাঁর মক্কেলকে এফআইআর না করে কী ভাবে ছেড়ে দেওয়া হল? শুভদীপবাবুর আরও অভিযোগ, তাঁর মক্কেল থানার বাইরে দাঁড়িয়েই জিডি লিপিবদ্ধ করিয়েছেন। তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থাটুকুও করা হয়নি। রাত ১১টা নাগাদ তাঁর মক্কেল নিজে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করান। এই বিষয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে জানান আইনজীবী। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।