মা-বাবা-দিদির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল বাড়ি থেকে। পুলিশকে সেই খবর দিয়েছিলেন ২০ বছরের যুবক। কিন্তু তদন্তে নেমে তাজ্জব পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পারলেন, যে খবর দিয়েছিল সেই অর্জুনই আসলে খুনী। মা-বাবা ও দিদিকে ছুরির দিয়ে খুন করে সে। তারপর পুলিশকে ডেকে জানায়, সে যখন বাড়িতে ছিল না, তখন এই ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, সম্পত্তির লোভে নিজেরই পরিবারের ৩ সদস্যকে খুন করে ওই যুবক।
পুলিশ সূত্রে খবর, অর্জুনের সঙ্গে বনিবনা ছিল না পরিবারের সদস্যদের। তাঁকে সহ্য করতে পারতেন না বাবা-মা। সেজন্য তাঁরা স্থির করেছিলেন যাবতীয় সম্পত্তি মেয়েকে লিখে দেবেন। আর সেই রাগ থেকেই বাবা-মা ও দিদিকে খুন করে অর্জুন।
মৃতদের নাম রাজেশ কুমার (৫১), কোমল ও তাঁদের মেয়ে কবিতা। বুধবার সকালে বাড়ি থেকেই তাঁদের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। অর্জুন সেই সময় পুলিশকে খবর দিয়ে বাড়িতে ডাকে। তদন্তকারীদের জানায়, সে মর্নিং ওয়াকে গিয়েছিল। ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বাড়ি ফিরে এসে তিনজনের লাশ দেখতে পায়।
দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানান, 'খুনের তদন্তে নেমে আমরা অর্জুনকে নিজেদের হেফাজতে নিই। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখনই খুনের কথা সে স্বীকার করে নেয়। অর্জুন নিজেই জানিয়েছে, মা-বাবা দিদিকে বেশি ভালোবাসায় সে হতাশ ছিল।'
পুলিশ কীভাবে তদন্তের পর্দাফাঁস করল?
বুধবার সকালে একটি ফোন পেয়ে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। সেখানে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখেন, বাড়িতেই পড়ে রয়েছে ৩ জনের মৃতদেহ। বাড়ির একমাত্র জীবিত সদস্য অর্জুন পুলিশকে জানান, তিনি মর্নিং ওয়াকে গিয়েছিলেন। এসে দেখেন এই অবস্থা। স্নিফার আনা হয়। ফরেন্সিক টিমও আসে। তদন্তকারীরা দেখেন, বাড়ি থেকে কোনও জিনিস চুরি যায়নি।
অর্জুনের দিকেই সন্দেহ গিয়ে পড়ে পুলিশের। তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে অর্জুন তাদের ভুলপথে পরিচালিত করছিল। তবে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ে ভেঙে পড়ে। সে জানায়, বাবার সঙ্গে তার সম্পর্ক একেবারেই ভালো ছিল না। লেখাপড়া ও ক্যারিয়ার নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে অর্জুনের ঝামেলা-বিবাদ লেগেই থাকত। পরে অর্জুন জানতে পারে, সব সম্পত্তি তার দিদিকে লিখে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তখনই সে পরিবারের সবাইকে খুনের পরিকল্পনা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, সেদিন রাতে ওই দম্পতির বিবাহ বার্ষীকী ছিল। তাঁরা ঘুমিয়েছিলেন। সেই অবস্থাতেই ছুরি দিয়ে খুন করে অর্জুন। তারপর মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, অর্জুন বিএ-র দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সে বক্সিংও শেখে।