ভারতে দ্রুত গতিতে বাড়ছে আবাসন শিল্প। এহেন সময়ে সস্তায় ফ্ল্যাট বিক্রির স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগও উঠছে বিস্তর। এবার তেমনই এক প্রতারণার অভিযোগ উঠল খোদ কলকাতায়। এই প্রতারণায় নাম জড়াল তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের। সেভেন সেন্স ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফ্ল্যাট বিক্রির নামে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করেছে তারা।
ইডি-র কাছে অভিযোগ দায়ের
কলকাতা ওয়েস্ট সেভেন সেন্স ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে প্রায় ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে ইডির দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি কয়েক জন বয়স্ক নাগরিককে নিয়ে ইডির কাছে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছিল নুসরতের সংস্থা। কিন্তু ফ্ল্যাট মেলেনি। শঙ্কুদেব ইডির কাছে নথিপত্র জমাও দিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেন। মঙ্গলবার আরও এক ধাপ এগিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, ওই টাকাতেই ফ্ল্যাট কিনছেন নুসরত। শুভেন্দুর এ-ও দাবি, সেই ফ্ল্যাটের দাম এক কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা।
২০১৪ সালে ডাউন পেমেন্ট করেছিলেন গ্রাহকরা
India Today-কে বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা দাবি করলেন, অনেক বড় দুর্নীতি। এই কোম্পানির সঙ্গে জড়িত তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। ২০১৪ সালে প্রতিটি গ্রাহকের থেকে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিল ওই সংস্থা। ৯ বছর কেটে গেলেও কেউ ফ্ল্যাট পাননি। এই ঘটনায় পুলিশও অভিযোগ নিতে চাইছিল না। ৪২৯ জন ব্যাঙ্ক কর্মী টাকা দিয়েছিলেন।
নুসরতের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা নুসরত জাহানের নাম করে অভিযোগ করছেন,ইতিমধ্যেই ইডি-র কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যদি ইডি মামলাটির তদন্ত না করে, তাহলে হাইকোর্টে যাবেন তাঁরা। শঙ্কুদেবের অভিযোগ, গ্রাহকদের টাকা আত্মসাত্ করে নিজের প্রোডাকশন হাউজে খরচ করেছেন। বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পান্ডার বক্তব্য, আলিপুর আদালত থেকে বারংবার ডেকে পাঠানো হয়েছে নুসরত জাহানকে। কিন্তু তিনি সমন পেয়েও আদালতে যাননি। এমনকী প্রশাসনের তরফ থেকেও ওই প্রতারিত ব্যক্তিদের মামলা তুলে নেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।’
সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল
ইন্ডিয়া টুডে-র তরফে সেভেন সেন্স ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির দ্বারা প্রতারিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শ্রীধর লাখোটিয়া জানানচ্ছেন, ৪২৯ জন প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মী ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কে ২০১৪ সালে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা করে জমা দেন। তারপর ৯ বছর কেটে গিয়েছে, কোনও ফ্ল্যাট জোটেনি। ফ্ল্যাটের ফুল পেমেন্ট তিনটি কিস্তিতে করার কথা ছিল। কিন্তু কোনও ফ্ল্যাট মেলেনি।