তিন নাবালকের হাতে খুন হল তাদেরই সহপাঠী। এমন চাঞ্চল্যকর অপরাধের ঘটনা ঘটেছে নিদায় জেলার ঘূর্ণি এলাকায়। জানা যাচ্ছে ৩ কিশোর তাদের ১৪ বছর বয়সী বন্ধুকে অপহরণ করেছিল। গেম খেলার জন্য একটি কম্পিউটার কেনার জন্য মুক্তিপণ দাবি করতেই এই অপহরণ করা হয়েছিল। পরে ওই নাবালককে রসগোল্লা এবং ঠান্ডা পানীয় খাওয়ানোর পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শনিবার কৃষ্ণনগর শহরের উপকণ্ঠে হিজুলি এলাকার একটি পুকুর থেকে বস্তায় বাঁধা ১৪ বছরের কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং রবিবার কৃষ্ণনগরের একটি জুভেনাইল আদালতে তাদের পেশ করা হয়।
জানা যাচ্ছে, নিহত কিশোর, ঘূর্ণির বাসিন্দা এবং অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। শুক্রবার বিকেলে কাছের একটি দোকানে কিছু জিনিস কিনতে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয়। শনিবার সকালে তার মায়ের কাছে ৩ লক্ষ টাকার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে, যার পরেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। কোতয়ালি থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, "আমরা তিনজনকে আটক করেছি, যারা মৃত কিশোরের স্কুলেই দশ শ্রেণির ছাত্র এবং স্থানীয় বাসিন্দাও। তারা ছেলেটিকে হত্যা করে তার দেহ পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে।" তিনি বলেন, আরও তদন্ত চলছে। হত্যার পেছনের উদ্দেশ্য জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সন্দেহ করছে যে তিন কিশোর বুঝতে পেরেছিল যে ছেলেটির মা মুক্তিপণের টাকা দিতে পারবেন না এবং তাই তাকে ছেড়ে দিলে পুলিশের হাতে ধরা পড়বে ,এই ভয়ে ছেলেটিকে হত্যা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কিশোরের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মৃতের বাবা অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন এবং তার মা আয়ার কাজ করেন। মা-ছেলে দুজনেই মামার বাড়িতে থাকতেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত তিন নাবালক একটি গেমিং ল্যাপটপ কেনার জন্য নিহতের পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তবে মৃতের পরিবার দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে অপহরণকারীরা ওই ছাত্রকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। উল্লেখযোগ্যভাবে, তারা ছাত্রটিকে তার শেষ ইচ্ছা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল এবং তা পূরণ করতে তাকে রসগোল্লা এবং কোলড্রিঙ্কসও দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তরা কিশোরের দেহ একটি ব্যাগে ভরে নির্জন স্থানে ফেলে দেয় যা পরে পুলিশ উদ্ধার করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জুভেনাইন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে।